স্বর্ণলতা রায়কে চিঠি - ৭ 
রানা সরকার 

কিছু লিখবো বললেই লেখা হয় ওঠে না কিংবা  ঘুমিয়ে পড়লেই ঘুম আসে না। লিখবো ভেবে এক ঘন্টা-দু ঘন্টা ডায়েরিতে হিজিবিজি এঁকে রেখে দিই আর ঘুমিয়ে পড়েই শুধু বালিশের একাঁধ ওকাঁধ। একাঁধ ওকাঁধ হতে হতে বসন্ত তাপে মাথার শিরা উপশিরা দিয়ে বয়ে যায় রক্তস্রোত ফিনকির মতো বেরিয়ে আসে শয়তান প্রেতাত্মা অতঃপর টিপে ধরে আমার গলা নাহ্ চোখ খুলতে পারছি না আঙুল নাড়তে পারছি না দরজায় ছিটকিনি দিয়েছিলাম মনে আছে তবুও বারংবার ক্যা-চ ক্যা-চ করে খুলে যাচ্ছে দরজা শরীর থেকে সরে যাচ্ছে চাদর পা ধরে টেনে নামিয়ে নিয়ে যাবে এবারে আমার দেহ আমি কিছুতেই উল্টে  নিতে পারছি না একদম ফ্রিজ্ মুখ দিয়ে বলতে পারছি না ওম্ শান্তি মাথা দিয়ে বেরোতে থাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম আর আমি জড় পদার্থ ধীরে ধীরে আরও গলা টিপে টিপে আমাকে নিয়ে যায় প্রেতাত্মা না পুরোটা নিতে পারেনি এখনও ফ্রিজ্ প্রেতাত্মার সাথে তর্ক মা বলেছেন পা ধুয়ে ঘুমোতে ধুয়েছি বিছানায় খেতে না সেটুকু ক্ষমার যোগ্য তবে কেনো কোন পাপ তারা যুক্তি মানে না আমি কোনো নেশা করিনি সিগারেট না সিদ্ধি  না  ব্রাউন সুগার  না  তবে কেনো চোখ খুলতে পারছি না ধীরে ধীরে আরও কালো হয়ে আরও চারজন এগিয়ে আসছেন আর একজন আমার গলা টিপে টিপে  এবারে নাক চেপে ধরেছে বুক ফুলে উঠছে মুখ ফুলে উঠছে সর্বদেহ ফুলে উঠছেে মাছ মাছের আত্মাা খাবি খাচ্ছি নীল-সবুজ-হলুদ-লাল পাহাড় নদী নদীর স্রোত স্রোতের নিচে ফসিল ফসিল গাছের ইতিহাস লুকিয়ে রেখেছে পাখিরা উড়ে এসে গাছেদের কানে মন্ত্র দিয়ে যায় গাছ রণচন্ডী গাছের শিকড় হাওয়ায় ভেসে এসে জালের মতো গলা টিপে ধরছে মন চিৎকার করছে কোন পাপ করিনি বিশ্বাস-ঘাতকতা করিনি সামান্য ঠোঁট নাড়তে পারছি না মৃত্যু নিশ্চিত পাহাড় হাসছে নদী হাসছে পাখি হাসছে গাছ হাসছে আমি চিৎকার করতে পারছি না মৃত্যু নিশ্চিত চারজন প্রেতাত্মা আরও এগিয়ে আসে সাদা-কালো ঠান্ডা-গরম ঘাম-লবণ জল - জল গলা শুকিয়ে আসছে ঠোঁট শুকিয়ে গেছে দেহ ভাসছে জল খাচ্ছি জল খাচ্ছি গলা ভিজছে না তৃষ্ণা মিটছে না মৃত্যু মৃত্যু নিশ্চিত মৃত্যু গাছ-ইতিহাস-জীবাশ্ম   কেউ  কেউ এগোচ্ছে না কেউ হাত বাড়াচ্ছে না চিৎকার করতে পারছি না ঠোঁট নাড়তে পারছি না সামান্য ওকাঁধ হতে পারছিনা মৃত্যু নিশ্চিত মৃত্যু  তবু মৃত্যু চাই না    বাঁচতে চাই বাঁচতে চাই সবার অভিশাপ নিয়েই বাঁচতে চাই চারজন আরও একজন পাঁচজন প্রেতাত্মা গলা চেপে ধরলে চোখ উল্টে গোল্লাপাঁক খেয়ে বেড়িয়ে আসে ঠোঁট নড়ে মন গুমরে বোবাস্বরে গলা কাটা ছাগলের মতো ব্যা করে ধড়পড় করে উঠে দেখি বালিশ আর মাথা লবণ হয়ে জীবন ফিরে পাওয়ার ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রেখেছে

অতঃপর, দীর্ঘ নিঃশ্বাস

অতঃপর আমি ডায়েরি নিয়ে বসি 
কবিতা লিখি 

তুমি যদি পাখি হয়ে উড়ে যেতে পারো 
আমি গাছ হতে পারি 
তুমি যদি বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়তে পারো 
আমি নদী হতে পারি