গৌতম সাহা, বর্ধমানঃ
আজ আর পাঁচটা দিনের মতো গতানুগতিক স্কুলে আসা আর বাড়ি ফেরা নয়।আজ শিক্ষক -ছাত্র ও ছাত্রীদের রোজকার গতানুগতিক পড়াশোনা নয়।আজ পড়াশোনাকে পাশ কাটিয়ে চড়ুইভাতির অনাবিল আনন্দে মেতে উঠলো ছোটো ছোটো কচিকাচারা।পশ্চিম বর্ধমান জেলার হীরাপুর চক্রে
দামোদর নদের তীরে কালাঝরিয়া গ্রামের কালাঝরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা।

আজ সমস্ত গতানুগতিকতা, নিয়মানুবর্তীতা বা প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে দামোদরের তীরে মেতে উঠলো বনভোজনে।ছাত্র ছাত্রীরাও সমস্ত জড়তা সরিয়ে রেখে কখনো নতুন স্যারের সাথে ব্যাট বল নিয়ে নেমে পড়েছে‌,কখনো বড়ো স্যারের সাথে ফুটবল খেলার আবদার করেছে। কেউ কেউ আবার তাদের প্রিয় ছোড়দি ম্যাডামের কাছে করেছে মোবাইলে গান চালিয়ে দেওয়ার অনুরোধ,কখনো বড়দি ম্যাডামের কাছে চকোলেটের জন্য হামলে পড়া।

সব মিলিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো থেকে হারিয়ে যাওয়া বনভোজনের পুরোনো স্বাদ আর হারিয়ে যাওয়া পুরানো দিনের খেলা আবার ফিরে পেলো বাচ্চারা।উল্লেখনীয় বিষয় হল এই পুরানো দিনের খেলা গুলিকেই বাচ্চাদের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষা দপ্তরের থেকে দেওয়া নোটিশ প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রায় পৌছে গেছে।বনভোজনের এই বিশেষ দিনে বাচ্চাদের হাতে তুলে দেওয়া হলো বার্ষিক পুরস্কার।বিগত শ্রেণীগুলিতে বাচ্চাদের পাঠ্ক্রমিক কর্মক্ষমতার উপর ভিত্তি করে প্রতি শ্রেণীর প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীকে পুরস্কার তুলে দেওয়া হলো।

দিনভর খেলা ধুলার সাথে চললো দেদার খাওয়া দাওয়া।রোজকার মিড ডে মিলের বাইরে গিয়ে মেনুরও ঘটেছিল আমূল পরিবর্তন।ভাত,মাংস,চাটনি,পাপড় থেকে বোঁদে সব কিছুর আয়োজন করা হয়েছিল।একদিনের জন্য নদীর ধারের ফাঁকা মাঠ এবং খোলা আকাশ হয়ে উঠেছিলো বাচ্চাদের পাঠশালা।প্রাসঙ্গিক ভাবে মনে পড়ে গেলো সুনির্মল বসুর " সবার আমি ছাত্র " কবিতাটি ও তার কয়েকটি লাইন।যেমন.....
"নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম,আপন বেগে চলতে" বা
"আকাশ আমায় শিক্ষা দিল,উদার হতে ভাই রে," বা
"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,সবার আমি ছাত্র" ইত্যাদি লাইন গুলি। 
রোজকার একঘেয়ে দিন গুলো থেকে আলাদা পথে হেঁটে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তাপ্তী বিশ্বাস মহাশয়ার এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে গ্রামবাসীরা।তবে এই উদ্যোগের পিছনে আসল মস্তিষ্ক হিসাবে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক অমিতাভ গড়াইয়ের নাম উঠে আসছে।