নিজস্ব সংবাদ দাতাঃ- আজ বিজিটিএ'র করা টিজিটি সংক্রান্ত একটি অবমাননা মামলায় পে কমিশন কে কমপ্লায়েন্স এভিডেভিড জমা দিতেই হবে বলে কড়া নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।  বৃহত্তর গ্র‍্যাজুয়েট টিচারস এসোসিয়েশান গ্র‍্যাজুয়েট টিচারদের টিজিটি স্কেল প্রদান ও "পাশ" তকমার অবসান কল্পে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের পাশাপাশি হাইকোর্টে ও একাধিক মামলা করে। গত ২২ শে জুলাই এমন ই একটি মামলায় মহামান্য হাইকোর্ট ম্যান্ডামাস জারী করে গ্র‍্যাজুয়েট টিচারদের বঞ্চনা দূরীকরণের আদেশ দেন। অর্থনৈতিক কোন অজুহাত সরকার দেখাতে পারবেন না বলে ও রায়ে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সরকার এই রায় কে উপেক্ষা করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পে কমিশন ঘোষণা করে। তখন বিজিটিএ'র তরফে আদালত অবমাননা মামলা করা হয়। ঐ মামলার দু- দুটো শুনানিতে সরকার পক্ষ অনুপস্থিত থাকে। এবং ঐ সময়ে ই গত ১৬ ই ডিসেম্বর শিক্ষা দপ্তরের রোপা ও প্রকাশ করে। যথারীতি সেই রোপাতে ও কোর্টের রায়ের কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যায় নি। পরে ২৪ শে ডিসেম্বরের শুনানি তে কোর্টের রায় মেনে সরকারকে ৪ঠা জানুয়ারীর মধ্যে এভিডেভিড জমা দিতে বলে হাই কোর্ট, কিন্তু সরকার সেই নির্দেশ ও মানেন নি।

আজ বিকেল তিনটেয় ৩৯ নং কোর্টে জাস্টিস মৌসুমী ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য উঠলে সরকারী পক্ষের আইনজীবী এভিডেভিডের ব্যপারটি লঘু করে দেখাতে চাইলে বিচারপতি যারপরনাই ক্ষুন্ন হন। বিজিটিএ অ্যাডভোকেট প্যানেল ও সওয়াল জবাবে বলেন যে সকার যদি ম্যান্ডামাসের মত রায় কে না মেনে অবমাননা মামলার নির্দেশ কে ও উপেক্ষা করেন তাহলে আইন ও বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থাটাই উঠে যাবে। তারা আরো বলেন যে সরকার  বার বার হাই কোর্টের রায় কে উপেক্ষা করছেন, এদিকে পে কমিশনের অপশন দেওয়ার কাজ ও শেষের দিকে তাহলে আখেরে কি সরকার হাই কোর্ট কে মান্যতা দেন না! জবাবে বিচারপতি বলেন যে তিনি একবার যখন অর্ডার কমপ্লাই করে হলফনামা দিতে বলেছেন তখন সরকার কে তা দিতে ই হবে। সরকার কেন তা গত ৪ঠা জানুয়ারীর  মধ্যে দেন নি তিনি তা জানতে চাইলে সরকারী তরফে ক্ষমা চেয়ে এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়,কিন্তু মাননীয়া বিচারপতি কঠোর মনোভাব দেখিয়ে দু দিন সময় দিতে চান। পরে সরকারী আইনজীবী নিজের মেডিকেল এপয়েন্টমেন্টের কথা উল্লেখ করে অন্তত তিন দিন সময় চেয়ে কাকুতি মিনতি করলে বিচারপতি তা মঞ্জুর করেন। ফলে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে  রায় কে সম্মতি জানিয়ে এভিডেভিড দিতেই হবে সরকারকে। তার আগে তা পিটিশনারদের কে জানাতে হবে। সবদিক বিবেচনা করে এই মামলার ফাইনাল জাজমেন্ট শোনাবেন বলে বিচারপতি মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুনঃ OPTION-IPF নিয়ে নতুন নির্দেশিকা 

হাইকোর্টে উপস্থিত বিজিটিএ সাধারণ সম্পাদক শ্রী সৌরেন ভট্টাচার্য এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, "  বিচার ব্যবস্থার উপর বিজিটিএ'র আস্থা ছিল, আছে, থাকবে। গনতান্ত্রিক রাস্ট্রে কোন সরকার ই আইনের উর্ধ্বে নন। কিন্তু পশ্চিম বঙ্গ সরকার বিজিটিএ  মামলার রায় কে যে ভাবে উপেক্ষা করেছে, তা গনতন্ত্র তথা সংবিধানের পরিপন্থী। আমাদের বিশ্বাস হাইকোর্ট সরকারে এই চরম ঔদ্ধত্যের সঠিক বিচার করবেন ও সরকার ও কোর্টের রায় মেনে আমাদের বঞ্চনা দূর করবেন।"

তিনি আরো বলেন," বিজিটিএ পশ্চিম বঙ্গের গ্র‍্যাজুয়েট টিচারদের বঞ্চনা দূরীকরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তাই আইনী প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আমাদের ১৬ ই জানুয়ারীর বিক্ষোভ মিছিল ও সভা ও চলবে।" বিজিটিএ সভাপতি শ্রী ধ্রুবপদ ঘোষাল বলেন, "পশ্চিম বঙ্গের গ্র‍্যাজুয়েট টিচার রা যে বঞ্চিত তা হাই কোর্টে একাধিক বার প্রমাণিত,কিন্তু সরকার গা জোয়ারি করে তা মানতে চাইছে না! এর থেকে ন্যাক্কারজনক ঘটনা আর হতে পারে না। তবে বিজিটিএ যেমন আইনের উপর আস্থা রেখেছে,তেমনি সরসরি আন্দোলন কর্মসূচী ও নিয়েছে। আগামী ১৬ ই জানুয়ারী বিক্ষোভ মিছিলের জন-সুনামী তে কলকাতা কে স্তব্ধ করে দেবে বৃহত্তর গ্র‍্যাজুয়েট টিচারস এসোসিয়েশান!"

আরও পড়ুনঃ OPTION-IPF নিয়ে নতুন নির্দেশিকা