আজ টানা নয় দিন অনশন করে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে হাপাতালে ভর্তি পার্শ্বশিক্ষিকা শিল্পী রায়(পুরুলিয়া)।পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন ও অনশনের  ১৫ দিন কেটে গেলেও এখনও উদাসীন সরকার। শিক্ষামন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। অনশনের জেরে এক পার্শ্ব শিক্ষিকার মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হল সংসদও । পশ্চিম মেদিনীপুরের পার্শ্বশিক্ষিকা রেবতী রাউতের  অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় গত সোমবার। এই নিয়ে চাপান-উতোর চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। শুক্রবার, লোকসভাও  উত্তাল হয় এই নিয়ে।

হুগলির সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি  লোকসভায় অভিযোগ জানিয়েছেন, পনেরো দিন পেড়িয়ে গেল পার্শ্বশিক্ষকরা অনশন করছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের থেকে কেউ সেখানে উপস্থিত হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। ৫-৬ জন হাসপাতালে ভর্তি। বাংলায় শিক্ষকদের অবস্থা শোচনীয়। মুখ্যমন্ত্রী মেলা-খেলার জন্য টাকা দিচ্ছেন, কিন্তু শিক্ষকদের দিকে তাকাচ্ছেন না। উল্টে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে অভিযোগ করছেন, টাকা দেওয়া হচ্ছে না। 

এ দিন পার্শ্ব শিক্ষকদের অনশন নিয়ে বুদ্ধিজীবীদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। বুদ্ধিজীবীরাও অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করেননি। সরকারের এমন উদাসীনতা চলতে থাকলে অনেক শিক্ষকের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন লকেট। 

উল্লেখ্য, বিকাশভবনের উল্টো দিকে সমকাজে সমবেতন-সহ ৪ দফা দাবিতে অনশন আন্দোলন করছেন পার্শ্বশিক্ষকরা। সেই অনশনে সামিল হয়েছিলেন রেবতী রাউত নামে এক শিক্ষিকা। অসুস্থতার জেরে ১৮ নভেম্বর বাড়ি ফিরে যান। ওই দিন রাতেই মৃত্যু হয় রেবতীর।

এদিকে রাজ্যপাল শুক্রবার ট্যুইট করে জানিয়েছেন,  "১১ নভেম্বর থেকে এক হাজারেরও বেশি পার্শ্বশিক্ষক আন্দোলন করছেন এবং তাঁদের মধ্যে ৩৭ জন শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের অনশনে বসেছেন। এ সমস্যা সমাধানে সব পক্ষকেই আমি আলোচনায় বসার আহ্বান জানাচ্ছি। মেদিনীপুরের পার্শ্ব শিক্ষিকা রেবতী রাউতের মৃত্যু হয়েছে। যা যথেষ্ট দুঃখজনক"।


এ মুহূর্তে রাজ্যপাল দিল্লীতে রাষ্ট্রপতির ডাকা বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন। এই বৈঠকে পার্শ্বশিক্ষকদের অনশন প্রসঙ্গ তুলতে পারেন ও সমস্যা সমাধানে বার্তা দিতে পারেন বলে মনে করছে বিশিষ্ট মহল। দুদিনের এই বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনা করার কথা। এ মত পরিস্থিতিতে রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনেকর মুখ্যমন্ত্রীকে পার্শ্বশিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরামর্শ দেন। তিনি পার্শ্ব শিক্ষিকার মৃত্যু নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।