ফাঁকা বাড়িতে তরুণীর উদ্দাম যৌনতা, ২০ লক্ষ টাকার সোনা নিয়ে উধাও বন্ধুরা
নিজস্ব প্রতিনিধি, দমদম: বাড়ির অভিভাবকরা অনুপস্থিত থাকলে অনেক সময় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উদ্দাম জীবনযাপনের প্রবণতা দেখা যায়, কিন্তু সেই জীবনযাপন যখন অপরাধের দিকে মোড় নেয়, তখন তা বড়সড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নাগেরবাজারের পূর্ব সিঁথি রোডের ঘোষ পাড়া এলাকায় ঠিক এমনটাই ঘটেছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার বাসিন্দা পেশায় ইটভাটার মালিক ঘোষ বাবুগত ৭ নভেম্বর সস্ত্রীক তিন দিনের জন্য বসিরহাটে তাঁদের আদি বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে সেই সময় একা ছিলেন তাঁর ২৩ বছর বয়সী কন্যা। অভিযোগ, বাবা-মা বাড়ি থেকে বেরোনোর পরিকল্পনা জানামাত্রই ওই তরুণী বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে একটি পার্টির ছক কষেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, বাবা-মা বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই ওই তরুণী প্রথমে যাদবপুরের এক বান্ধবীকে বাড়িতে ডেকে নেন। এরপর পরবর্তী তিন দিন ধরে দফায় দফায় বহিরাগত যুবকদের আনাগোনা চলে ওই বাড়িতে। প্রথম ও দ্বিতীয় দিন দু’জন করে যুবক আসলেও তৃতীয় দিন চারজন যুবক সেই আসরে উপস্থিত ছিল। পুলিশি জেরায় উঠে এসেছে যে, আমন্ত্রিত এই যুবকদের অনেকের সঙ্গেই ওই তরুণীর পরিচয় হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই তিন দিন বাড়িতে দামী মদের আসরের পাশাপাশি অসামাজিক কার্যকলাপও চলেছিল। পুলিশি তল্লাশিতে বাড়ি থেকে গর্ভনিরোধক পিলের প্যাকেট এবং সিসিটিভি ফুটেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণও উদ্ধার করা হয়েছে।
যখন তরুণী ও তাঁর বান্ধবীরা নেশা ও ফূর্তিতে মগ্ন ছিলেন, ঠিক সেই সুযোগেই আলমারি খুলে প্রায় ১৫ ভরি সোনার গয়না এবং নগদ ১০ হাজার টাকা সরিয়ে ফেলে অভিযুক্ত যুবকরা। ১০ নভেম্বর ত্রিদিব বাবু সস্ত্রীক বাড়ি ফিরে আলমারি ফাঁকা দেখে হতবাক হয়ে যান এবং মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বুঝতে পারেন যে তাঁর অবর্তমানে আসা মেয়ের বন্ধুরাই এই চুরির পিছনে রয়েছে। এর পরেই তিনি দমদম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে পুলিশ তরুণীর মোবাইল ফোনের কল লিস্ট ও সিসিটিভি ফুটেজ সূত্র ধরে কলকাতার একবালপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সিদ্ধান্ত থাপা ও জেইন খান নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করে।
ধৃতদের জীবনযাপন দেখে খোদ তদন্তকারীরাও অবাক হয়ে গিয়েছেন। জানা গেছে, ধৃত সিদ্ধান্ত থাপার মা একটি সিকিউরিটি এজেন্সিতে মাত্র ৮ হাজার টাকা বেতনে কাজ করলেও সিদ্ধান্ত ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দামের আইফোন ব্যবহার করত, যার কিস্তি মেটানো হতো মায়ের ওই সামান্য বেতন থেকেই।
চুরির সোনা বিক্রি করে তারা গত কয়েকদিন দামী ব্র্যান্ডের মদ, নামী রেস্তোরাঁ এবং হুক্কা বারে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উড়িয়েছে। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে এলেও তাদের চালচলন ছিল অনেকটা ‘সেলেবদের’ মতো। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে ধৃতরা পুলিশি হেফাজতে রয়েছে এবং পুলিশ চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊