চির ঘুমের দেশে কবি-সাংবাদিক নাদিরা আজাদ: 'প্রেম এখন কেমোথেরাপির মতো আশাময় যন্ত্রনাদায়ক হচ্ছে...'
দিনহাটা: তরুণ কবি ও সাংবাদিক নাদিরা আজাদ (নাদিরা আহমেদ) আর নেই। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন দিনহাটার এই প্রতিশ্রুতিময় ব্যক্তিত্ব। তাঁর অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ কোচবিহারের সাহিত্য, সংস্কৃতি মহল এবং আত্মীয়-স্বজন।
নিজের লেখাতেই যেন জীবনের কঠিন সত্যকে তুলে ধরেছিলেন নাদিরা। তাঁর লেখা কবিতায় তাই সে বলেছে-
"আমায় বলতে হয়নি , মানুষের সম্পর্ক আর ফুলের মতো নরম হচ্ছে না..... ভোর.... আলো..... প্রেম এখন কেমোথেরাপির মতো আশাময় যন্ত্রনাদায়ক হচ্ছে.....
আমি বলিনি.... বলতে চাইনি কখনোই...."
দিনহাটার বড় আটিয়াবাড়ির আশ্রম রোডের বাসিন্দা নাদিরা আজাদ নামে কবিতা লিখতেন। সাংবাদিক হিসেবেও তাঁর পরিচিতি ছিল। কবিতা হোক বা থিয়েটার—সব ক্ষেত্রেই তাঁর স্বর ছিল স্বতন্ত্র ও স্পষ্ট।
নাদিরার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলি হলো: খড়কুটোর ডাকে, মুখোশ পৃথিবী, মৃত ফুল ও সবুজ দেশের কবিতা। এছাড়াও তাঁর আরও একটি কাব্যগ্রন্থ 'আয়ুহীন' প্রকাশের কাজ চলছিল।
বহুদিন ধরে একটি অটোইমিউন রোগ নিয়ে লড়াই করছিলেন নাদিরা। শৈশব থেকে অসুস্থ নাদিরার চিকিৎসা চলতে থাকে। এবছর অষ্টমী পূজায় নাদিরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিলিগুড়িতে একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি হয় তারপর সেখান থেকে আরও গুরুতর অবস্থায় SSKM এ টানা প্রায় একমাস মৃত্যুর সাথে লড়াই চালায় নাদিরা। দীর্ঘ রোগভোগের পর তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যু শিল্প-সাহিত্য মহলে গভীর শূন্যতার সৃষ্টি করল।
বামপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী নাদিরা তাঁর জীবদ্দশায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে তাঁর লেখনী ও কাজের মাধ্যমে ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে কোচবিহারের শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্যকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বাড়িতে রেখে গেল বাবা, মা, আরও দুই বোন। বাবা জরাবাড়ি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊