Payal Dhare: ভারতের জনপ্রিয় এই ইউটিউবারের ভাইরাল MMS কে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য
ভারতের জনপ্রিয় ইউটিউবার ও গেমার পায়েল ধারে বর্তমানে এক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল ম্যাচে মাঠে থাকার সময় তাঁর একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবির পরপরই সমাজমাধ্যমে একটি এমএমএস ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয় ভিডিওতে দেখা তরুণী পায়েল।
ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং নেটাগরিকদের একাংশ সেটি সংগ্রহের জন্য বিপুল অর্থ দিতে প্রস্তুত ছিলেন। তবে পরে একাধিক সংবাদমাধ্যম ও ডিজিটাল বিশেষজ্ঞ যাচাই করে জানান, ভিডিওটি আসলে ডিপফেক প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি, এর সঙ্গে পায়েলের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রথমে নীরব থাকলেও পরে ইনস্টাগ্রামে একটি বিস্তারিত বিবৃতি দেন পায়েল। তিনি স্পষ্ট করে জানান, ভিডিওতে দেখা তরুণী তিনি নন এবং তাঁর নাম ও ছবির অপব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে যাতে এ ধরনের ভুয়া কনটেন্ট ছড়ানো বন্ধ হয়। অনুরাগীদের উদ্দেশে তিনি আবেদন করেন ভিডিওটি শেয়ার বা ডাউনলোড না করতে।
২০০০ সালে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া জেলার একটি গ্রামে জন্ম পায়েলের। ছত্তীসগড়ের ভিলাইয়ের একটি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই ভিডিও গেমের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও বাবার সমর্থনে তিনি গেমিং জগতে প্রবেশ করেন। ২০১৯ সালে ইউটিউবে ‘Payal Gaming’ নামে চ্যানেল খুলে GTA V, PUBG এবং BGMI-এর মতো জনপ্রিয় গেম লাইভ স্ট্রিম করে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি ভারতীয় গেমিং জগতের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন। ২০২৩ সালে ‘Dynamic Gaming Creator’ এবং ‘Female Streamer’ পুরস্কার পান তিনি। ২০২৪ সালে ‘Gaming Creator of the Year’ পুরস্কার তাঁর কেরিয়ারে যুক্ত হয়। বর্তমানে তিনি ভারতের শীর্ষ ইস্পোর্টস সংস্থা S8UL Esports-এর সঙ্গে যুক্ত।
ভারতে গেমিংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনায়ও অংশ নিয়েছিলেন পায়েল। সেই বৈঠকে গেমারদের চ্যালেঞ্জ, ভারতীয় পুরাণভিত্তিক গেমের বাজার প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ে মত বিনিময় করেন তিনি।
সমাজমাধ্যমে পায়েলের জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয়। ইউটিউবে তাঁর মূল চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৪৫ লক্ষের বেশি, দ্বিতীয় চ্যানেলে ছয় লক্ষের বেশি। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ৪৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। ফেসবুকেও বিপুল অনুরাগী রয়েছে তাঁর।
গেমিংয়ের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন। Samsung, OnePlus-এর মতো সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। ইউটিউব স্ট্রিমিং থেকে মাসে ১০ লক্ষ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা আয় করেন তিনি। অর্থাৎ বছরে আয় করেন ১.২ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম থেকেও আয় করেন তিনি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১০ কোটিরও বেশি।
সাম্প্রতিক এমএমএস বিতর্ক তাঁর জনপ্রিয়তাকে আঘাত করলেও প্রমাণিত হয়েছে ভিডিওটি ভুয়া। পায়েল নিজে দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, তিনি এর সঙ্গে যুক্ত নন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গেমিং ক্যারিয়ার, সামাজিক মাধ্যমের বিপুল জনপ্রিয়তা ও ব্যবসায়িক সাফল্যের মাধ্যমে তিনি ইতিমধ্যেই ভারতের ডিজিটাল বিনোদন জগতে এক শক্তিশালী নাম হয়ে উঠেছেন।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊