একাদশ-দ্বাদশের নথি যাচাইয়ে ধরা পড়ল ২৬ ভুয়ো চাকরিপ্রার্থী, কড়া নজরদারিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নথি যাচাই পর্বে বড়সড় অনিয়ম ধরা পড়েছে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ২৬ জনকে ভুয়ো হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এঁরা অভিজ্ঞতার নম্বর অর্জনের ক্ষেত্রে এবং জাতিগত শংসাপত্রে কারচুপি করেছেন। ধরা পড়া প্রার্থীদের মধ্যে একাদশের ১৪ জন এবং দ্বাদশের ১২ জন রয়েছেন।
গত ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে একাদশ-দ্বাদশের ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়া প্রার্থীদের নথি যাচাই বা ভেরিফিকেশন পর্ব। গত তিনদিনে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস এবং কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ের প্রার্থীদের নথি পরীক্ষা করা হয়। সেখানেই এই ২৬ জন ভুয়ো চাকরিপ্রার্থী ধরা পড়ে। জানা গেছে, অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর পাওয়ার জন্য তাঁরা বিভিন্ন স্কুলের কাছ থেকে পাওয়া শংসাপত্র দেখিয়েছিলেন। শংসাপত্রগুলি নির্দিষ্ট স্কুলের প্যাডে লেখা থাকলেও তা ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, এই ২৬ জনের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে যেসব স্কুলের নাম ব্যবহার করে ভুয়ো শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছে, সেই স্কুলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। কমিশন আগেই জানিয়েছিল, ইন্টারভিউ তালিকায় একজনও অযোগ্য বা ভুয়ো প্রার্থী থাকলে তা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বাতিল করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কমিশন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেই অনুযায়ী এই ২৬ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় বারবারই আদালত কমিশনকে সতর্ক করেছে যাতে কোনও ভুয়ো প্রার্থী তালিকায় না থাকে। কমিশনও জানিয়েছিল, নথি যাচাই প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। এবার সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখা গেল।
এই ঘটনার পর শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। প্রার্থীদের মধ্যে কারচুপি রুখতে কমিশন আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুয়ো শংসাপত্রের মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা শুধু নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কলঙ্কিত করছে না, বরং যোগ্য প্রার্থীদের অধিকারও কেড়ে নিচ্ছে।
শিক্ষক নিয়োগে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনায় প্রমাণিত হলো যে কমিশন এখন আরও সতর্ক এবং কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে কোনও অযোগ্য বা ভুয়ো প্রার্থী তালিকায় না থাকে, তার জন্য নথি যাচাই প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই ২৬ জন ভুয়ো প্রার্থীর ধরা পড়া কমিশনের সতর্কতা ও কঠোরতারই প্রতিফলন। তবে এর সঙ্গে যুক্ত স্কুলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
.webp)
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊