Tejas Jet Crash: কারিগরি ও ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে
দুবাইয়ের আল-মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত বিমান প্রদর্শনীতে ভারতের তেজস যুদ্ধবিমানের দুর্ঘটনায় উইং কমান্ডার নমন সিয়াল (৩৭) প্রাণ হারিয়েছেন। কোয়েম্বাটুরে অবস্থানরত নমন সিয়াল এই প্রদর্শনীতে অংশ নিতে দুবাই গিয়েছিলেন। বিমানটি ভারসাম্য হারিয়ে নিচে নামার সময় তিনি সময়মতো বেরিয়ে আসতে না পারায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে উচ্চ-স্তরের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভাইরাল ভিডিও বিশ্লেষণে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নেতিবাচক জি-টার্নের সময় ভারসাম্য হারিয়ে বিমানটি ডুবে যায়। নেতিবাচক জি-টার্ন বলতে বোঝায় এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে বিমান এবং এর আরোহীরা স্বাভাবিক মাধ্যাকর্ষণ দিকের বিপরীত বলের শিকার হন, যা অ্যারোবেটিক কৌশলের সময় ঘটে থাকে।
হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার নাগরোটা বাগওয়ানের সেরাথানা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা নমনের মৃত্যুতে গোটা এলাকা শোকস্তব্ধ। তার বাবা, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জগন্নাথ জানিয়েছেন, নমন গত ১৬ বছর ধরে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তার মরদেহ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে সোমবার বা মঙ্গলবার জন্মস্থানে পৌঁছাবে এবং সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। নমনের একটি ১০ বছরের কন্যা রয়েছে।
দুর্ঘটনার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে তেজস থেকে তেল ফাঁসের দাবি করা হয়েছিল। তবে সরকার এই দাবিকে বিভ্রান্তিকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর ফ্যাক্ট-চেকিং ইউনিট জানিয়েছে, ভিডিওতে যে পদার্থটি দেখা গেছে তা তেল নয়, বরং বিমান থেকে নির্গত সাধারণ জল। এই জল বিমানের পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং অক্সিজেন উৎপাদক ব্যবস্থার অংশ, যা আর্দ্র আবহাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে নির্গত হয়।
সরকারের মতে, এই বিভ্রান্তিকর প্রচারণা বিমানের প্রযুক্তিগত নির্ভরযোগ্যতা ও গুণমানকে অসম্মান করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সাহসী পাইলটের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, “জাতি তাদের সাহসকে সম্মান জানায় এবং পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।”
এদিকে, সেন্টার ফর এয়ার পাওয়ার স্টাডিজের ডিজি এয়ার মার্শাল অনিল চোপড়া জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনই বলা কঠিন। ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR) বিশ্লেষণের পর জানা যাবে কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল কিনা। এলসিএ তেজসের অতীত রেকর্ড ভালো হলেও, কোর্ট অফ ইনকোয়ারি এই ঘটনার প্রতিটি দিক নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখবে।
তিনি আরও বলেন, কারিগরি অন্তর্ঘাত, যন্ত্রাংশ বা সফ্টওয়্যারে সমস্যা, এমনকি সাইবার আক্রমণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও এর সম্ভাবনা কম, কারণ সফ্টওয়্যারটি দেশীয় এবং দুর্ঘটনার ঠিক আগে বিমানটি মসৃণভাবে উড়ছিল। ইঞ্জিন ব্যর্থতা বা থ্রাস্ট ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
এই দুর্ঘটনা শুধু একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রশ্নও তুলে ধরেছে। তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে গোটা দেশ, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যায় এবং সাহসী পাইলটদের জীবন সুরক্ষিত রাখা যায়।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊