একাধিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে,ভবিষ্যতের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী
সঞ্জিত কুড়ি, পূর্ব বর্ধমান:-
চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ৫ বছর বয়স থেকে লড়াই শুরু করা মধুমিতার লক্ষ্য নিজেকে বাঁচানোর সঙ্গে অপরকে বাঁচানো। বর্ধমানের গুসকরার বাসিন্দা মধুমিতা মণ্ডল গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। বাবা যুব মণ্ডল পেশায় লরীর চালক। মা কবিতা মণ্ডল গৃহবধু। চরম আর্থিক সংকটের মধ্যেও মধুমিতা ৫ বছর বয়স থেকে ক্যারাটে শিখছে। সম্প্রতি কলকাতার নেতাজী ইণ্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ৯ম ইন্টারন্যাশনাল ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নসিপে দ্বিতীয় স্থান পেয়ে রূপো জিতেছে। এই প্রতিযোগিতায় কুমিতে পেয়েছে ব্রোঞ্জ। মধুমিতার প্রশিক্ষক সুদামা পাঠক জানিয়েছেন, প্রথমে মধুমিতা কিক বক্সিং দিয়ে শুরু করে। এখন শোতোকান ক্যারাটেতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই সে চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক, অসমে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় রূপো জেতে। মধুমিতার মা কবিতা মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁরও ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল ক্যারাটে শেখার। কিন্তু ছোটবয়সে বাবা মারা যাওয়ায় তাঁর স্বপ্ন পূরণ হয়নি। হয়নি লেখাপড়াও। সেজন্য তিনি চান তাঁদের যত কষ্টই হোক মেয়ে ক্যারাটে শিখুক। কবিতা দেবীদের দুটি কন্যা সন্তান।
তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী লরীর চালক। প্রায়ই তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হয়। কখনও কখনও মাসে একদিন বাড়িতে আসার সুযোগ পান। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে প্রবল আর্থিক সংকটের মুখেও তিনি মেয়েকে নিজের আত্মরক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অন্যকে যাতে সাহায্য করতে পারে তার শিক্ষা দিতে চাইছেন। তিনি জানিয়েছেন, একসময় তিনি বিড়ি বাঁধার কাজ করতেন। কিন্তু এখন আর সময় পাননা। মেয়েকে দাঁড় করাতে অন্যের কাছে হাতও পাততে হয়। কিন্তু এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাঁদের আশা মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করা।
মধুমিতা জানিয়েছে, সে ক্যারাটে নিয়ে আরও এগোতে চায়। একইসঙ্গে তার স্বপ্ন শিক্ষিকা হওয়া। নিজে ভালভাবে ক্যারাটে শেখার সঙ্গে সঙ্গে সে অন্যদেরও আত্মরক্ষার এই শিক্ষা দিতে চায়।
মধুমিতার বাবা যুব মণ্ডল বলেন আমি ট্রাকচালক ঠিকমতো সময় দিতে পারি না,বাড়িতেও থাকি না, স্ত্রীই মেয়েদের দেখভাল করে। আর্থিক সমস্যা তো আছেই। সরকার থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি। এত অর্থ কষ্টের মধ্যেও মেয়ের ইচ্ছা পূরণের লক্ষ্যে আরো পরিশ্রম করতে রাজি যুব মণ্ডল।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊