পাঠশালা বন্ধ, পাশের গ্রামের সরকারি বিদ্যালয়ে ক্ষুদে পড়ুয়াদের যাত্রা, ক্ষোভে গ্রামবাসী 

school



রঞ্জন কুমার বেরা, ঝাড়গ্রাম:

ঝাড়গ্রাম জেলার অন্তর্গত নয়াগ্রাম চক্রে ভালুকগাজারী গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, যেখানে সাজানো শ্রেণিকক্ষ আছে, মিড ডে মিল রান্নার পরিকাঠামো আছে, পায়খানা ঘর আছে,পানীয় জলের সুব্যবস্থা আছে। এতকিছু থাকা সত্ত্বেও নেই কোন শিক্ষক শিক্ষিকা কিংবা ছাত্র ছাত্রী। ফলে বন্ধ পাঠশালা, কোমল মতি ছাত্র ছাত্রীদের রোদ জল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পড়তে যেতে হয় কয়েক কিলোমিটার দূরে পাশের গ্রামের বিদ্যালয়ে। স্বাভাবিকভাবেই ছাত্র-অভিভাবকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে কিন্তু কেন?

এর সদুত্তর খুঁজতে গতকাল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন,উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত হয় ঐ স্কুলের আঙিনায়। বিদ্যালয় পরিদর্শন করে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথোপকথন করেন তারা। ইতিপূর্বে গ্রামের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ একত্রিত হয়ে বিদ্যালয় দ্রুত খুলে দেবার দাবিতে একটি কমিটি গঠন করেছেন সেই কমিটির সভাপতি নীলকান্ত মাহাত, সম্পাদক তরুণ দাস ও কয়েকজন গ্রামবাসী জানালেন তাদের গ্রামের প্রায় ২০-২৫ জন ছাত্র ছাত্রীকে সুকৌশলে পাশের গ্রামের বিদ্যালয়ে ভর্তি করে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা শূন্য দেখিয়ে এই বিদ্যালয়ের নিযুক্তা শিক্ষিকাকে বদলি করে বিদ্যালয়টিকে শিক্ষক শূণ্য করে দিয়েছে প্রশাসন।

ইতিপূর্বে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির কাছে দরবার করলে উনি সাত দিনের মধ্যে বিদ্যালয়টি খুলে দেবার মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু তার পরে মাসাধিককাল অতিবাহিত হয়ে গেলেও প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো হেলদোল নেই। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামনের শিক্ষা বর্ষ থেকে বিদ্যালয়টি খুলে দেবার মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- "এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সরকার খুব সন্তর্পনে কম ছাত্র ছাত্রী যুক্ত বিদ্যালয় গুলোকে তুলে দেওয়ার অ্যাসিড টেস্ট করেছে। সাধারণ মানুষের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নিতে শিক্ষাক্ষেত্রকে সঙ্কুচিত করতে চাইছে। আমরা এই অপপ্রয়াসের তীব্র নিন্দা করছি।"

সাথে গ্রামবাসীদের পদক্ষেপের প্রশংসা করে উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবী দ্রুত এই বিষয়ে গ্রামবাসী্রা যদি সুবিচার না পান জেলা তথা রাজ্য জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।