বিশ্বকর্মা প্রতিমার কাজ চলছে জোর কদমে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন কুমারটুলিতে, এখন শুধুই ব্যস্ততা মৃৎশিল্পীদের

Potters



জয়দীপ মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুর : 
 

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবের আগেই বিশ্বকর্মা পুজো। ব্যাস্ততা পাটুলি পাড়ায়। হাতেগোনা মাত্র আর পাঁচ দিন, চলতি মাসের ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সারা বাংলা জুড়ে নানান কলকারখানা সহ অনেক দোকান লোহা লক্কড়ের দোকান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পূজিত হবেন কারিগরি দেবতা তথা বিশ্বকর্মা দেব। তার সাথে সাথেই কিছুদিনের মধ্যেই মহালয়ার পূণ্য তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে মাতৃপক্ষের সূচনা হবে এবং শারদীয়া উৎসব দেবী দুর্গাপূজা শুরু হবে। চলতি সপ্তাহের অন্ত থেকেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গো উৎসবের দামামা বেজে উঠবে। 



প্রসঙ্গত, গত দুবছর তথা ২০২০-২০২১ ও ২০২২ সালে করোনা আবহ ও লকডাউনের জেরে বিশ্বকর্মা প্রতিমার বায়না তেমন না পাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে ছিল কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের। তবে লকডাউন শিথিল হয়েছে অনেকদিন আগেই আর পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক তাই মুখে হাসি ফুটেছে মৃৎশিল্পীদের। বাঙালির আবেগের ওপর অন্য কিছু হয় না কারণ বিশ্বকর্মা পূজা মানেই আগমনীর বার্তা বিশ্বকর্মা পুজো শুরু হওয়া মানে দেবী দুর্গার বোধন শুরু হওয়া তাই খুশির জোয়ারে ভাসতেই বিশ্বকর্মা পূজার মধ্য দিয়ে দূর্গাপূজার আবেগে ভাসবেন সকলে। তার আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের বিশ্বকর্মা প্রতিমার শেষ তুলির টান দিতে দেখা গেল, তাদের প্রস্তুতি ভীষণভাবে তুঙ্গে কারণ সপ্তাহতেই অর্ডার করা বিশ্বকর্মা প্রতিমা পৌঁছে দিতে হবে নানান জায়গায়।



এই বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের দত্তপাড়া এলাকাযর মৃৎশিল্পী গৌরাঙ্গ শীল জানান, "লকডাউনের জেরে প্রতিমা বিক্রি ও বায়না না পেয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল। লকডাউন শিথিল হয়েছে পরিস্থিতি এখন পুরো স্বাভাবিক ও বিশ্বকর্মা পুজোর দিন এগিয়ে আসর আগে থেকে বিভিন্ন ক্লাব অন্যান্য কারখানা দোকান বড় বড় বাড়ি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছোট-বড় নানান ধরণের বিশ্বকর্মা প্রতিমা বায়না করে যাচ্ছেন, ১৬ তারিখে ডেলিভারি দিব তাই শেষ প্রস্তুতি চলছে, আমাদের দিকে ভগবান মুখ তুলে তাকিয়েছেন"। 



 এই কুমোরটুলিতে ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০০ টাকা অব্দি বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় মাঝারি সাইজের বিশ্বকর্মা প্রতিমা তৈরীর প্রস্তুতি চলছে। জানা গেছে এই মৃৎশিল্পী তার নিচের হাতে রাত দিন এক করে ঘেমে নিয়ে প্রায় ৪০টির অধিক প্রতিমা তৈরি করছেন তাই এখন তাদের নাওয়া খাওয়ার সময় নেই সপ্তাহের অন্তেই আগামী পাঁচ দিন পর তথা ১৮ই সেপ্টেম্বর কারিগরি দেবতা বিশ্বকর্মার পুজো তার আগেই বিভিন্ন জায়গা থেকে বায়না করা প্রতিমা ও বাজারে বিক্রি করবার জন্য প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততা চলছে।




তবে বলাই বাহুল্য, প্রতিমা বিক্রির বায়না পেয়ে হাসি মুখে মনের আনন্দে কারিগরি দেবতা তথা বিশ্বকর্মা ঠাকুরকে তৈরি করেছেন মৃৎশিল্পীরা। রাজ্যজুড়ে চলতি মাসের ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পূজার পাশাপাশি বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবের দামামা বেজে উঠবে এবং দেবী দুর্গার বোধন শুরু হবে তার সাথেই মাতৃ পক্ষের সূচনা হবে আর তাতেই তাল মিলিয়ে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কলকারখানা সহ ক্লাব, বারোয়ারী ও বনেদি বাড়ি, বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বকর্মা পূজা ও দূর্গাপূজা হবে আর তাতেই এই আনন্দ জোয়ারে গা ভাসাবেন আপামর বাঙালি।




তাই তার আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন কুমোরটুলিতে কারিগরি দেবতা তথা বিশ্বকর্মা প্রতিমা তৈরির শেষ প্রস্তুতি চলছে তুঙ্গে। দিনরাত এক করে ঘেমে নেয়ে প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন মৃৎশিল্পীরা। তাদের ঘরে এখন শুধুই ব্যস্ততা প্রতিমা তৈরীর জন্য।