প্যারাটিচারদের বেতন কি সত্যিই ৩৫-৪০ হাজার হচ্ছে? সাথে নতুন নামকরণের সম্ভাবনা

Para-teacher Salary Hike: প্যারাটিচারদের বেতন কি সত্যিই ৩৫-৪০ হাজার হচ্ছে? সাথে নতুন নামকরণের সম্ভাবনা


কলকাতা, ৬ই জুলাই, ২০২৫: রাজ্যের হাজার হাজার প্যারাটিচার বা পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য বড়সড় সুখবরের ইঙ্গিত? কলকাতা হাইকোর্টের এক সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণের পর রাজ্যের শিক্ষা মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন কাঠামোয় আমূল পরিবর্তন এনে তা ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা (Para-teacher Salary Hike) করার পাশাপাশি তাঁদের 'অতিরিক্ত সহকারী শিক্ষক' (Additional Assistant Teacher) হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টিও সামনে এসেছে। এই খবরে আশার আলো দেখছেন রাজ্যের কয়েক লক্ষ পার্শ্বশিক্ষক।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট পার্শ্বশিক্ষকদের এক মামলার শুনানিতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি তাঁদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে, পার্শ্বশিক্ষকরা প্রায়শই স্থায়ী শিক্ষকদের মতোই দায়িত্ব পালন করেন, অথচ বেতনের ক্ষেত্রে বিপুল বৈষম্যের শিকার হন।

  • বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব: আদালত রাজ্য সরকারকে পার্শ্বশিক্ষকদের ন্যূনতম বেতন ৩৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকার মধ্যে করার বিষয়টি বিবেচনার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।

  • নতুন নামকরণ: 'প্যারাটিচার' বা 'পার্শ্বশিক্ষক' নাম পরিবর্তন করে তাঁদের ' অতিরিক্ত সহকারী শিক্ষক' হিসেবে নামকরণ করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে, যা তাঁদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

বর্তমান পরিস্থিতি ও শিক্ষকদের দাবি

বর্তমানে রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষকরা দুটি স্তরে বিভক্ত—প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক। তাঁদের বেতন কাঠামো স্থায়ী শিক্ষকদের তুলনায় অনেক কম। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা বেতন বৃদ্ধি, স্থায়ীকরণ এবং যোগ্য সম্মান প্রদানের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। তাঁদের মূল দাবিগুলো হলো:

  • স্থায়ী শিক্ষকদের সমতুল্য বেতন।

  • 'সমকাজে সমবেতন'-এর নীতি কার্যকর করা।

  • শিক্ষক হিসেবে পূর্ণ মর্যাদা প্রদান।

সরকারের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

কলকাতা হাইকোর্টের এই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের উপর কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি না করলেও, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। রাজ্য সরকার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। তবে, এত বড় সংখ্যক শিক্ষকের বেতন বৃদ্ধির আর্থিক দায়ভার সরকারের উপর একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

শিক্ষা মহল মনে করছে, সরকার যদি এই প্রস্তাব গ্রহণ করে, তবে তা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। এটি কেবল পার্শ্বশিক্ষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতিই করবে না, তাঁদের মনোবলও বাড়াবে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে শ্রেণিকক্ষের পঠনপাঠনে। আপাতত, সমস্ত পার্শ্বশিক্ষক এবং শিক্ষা মহল রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে।