Bengali New Year, নববর্ষ, শুভ নববর্ষ, ১ লা বৈশাখ, বৈশাখী শুভেচ্ছা 

শুভ নববর্ষ



বৈশাখ মানেই বাঙালির আবেগ, বৈশাখ মানেই বাঙালির আনন্দ যাপন, বৈশাখ মানেই উৎসব আয়োজন, বৈশাখ মানেই নতুন পোশাক, বৈশাখ মানেই নতুন বছর , নতুন সংকল্প। বাঙালির কাছে বৈশাখ মানেই এক ভালোবাসা।



আর এই বৈশাখী আনন্দের শুরুটা হয় পহেলা বৈশাখ বা ১ লা বৈশাখ থেকেই। চৈত্র সংক্রান্তিতে নিম-তিতা খেয়ে পহেলা বৈশাখে ভুরিভোজ। কি থাকেনা সেই খাবারের তালিকায়। মাছ, মাংস, দই, মিষ্টি, আরও কতো কি।



বাঙালির পহেলা বৈশাখ দিনটি বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন। এই দিনে দেশ ধর্ম নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আনন্দে মেতে ওঠে। পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ তো বটেই তার সাথে ত্রিপুরা এবং আসাম রাজ্যের কিছু অংশেও বাংলা নববর্ষ মহা ধুমধাম সহকারে পালিত হয়।



১ লা বৈশাখে দোকানে দোকানে হালখাতা করতে যেমন দেখা যায়, তেমনি বিভিন্ন শোভাযাত্রাও লক্ষ্য করা যায়। অনেক স্থানে বৈশাখী মেলার আয়োজনও করা হয়। নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় প্রিয়জনদের। কয়েকবছর আগেও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে হাজারো রকমের কার্ড পাওয়া যেতো। কিন্তু এখন আর তা দেখা যায় না। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম, ট্যুইটার জুড়ে এখন ডিজিটাল গ্রেটিংস এর বিনিময়।


নববর্ষ যেনো বিশ্বের সমগ্র বাঙালির এক হওয়ার দিন। ১ লা বৈশাখ বিশ্বের সমগ্র বাঙালিই যেনো একাত্মতা অনুভব করে এই দিনটিতে।


এক কথায় নববর্ষ প্রতিটি বাঙালির জীবনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। কিন্তু কবে থেকে শুরু হলো বাঙালির বর্ষ বরণ ? কোন কোন ঐতিহাসিক মনে করেন সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বহুকাল আগে থেকেই সৌর বছরের প্রথম দিন বাংলা, আসাম, কেরালা, মনিপুর, নেপাল ইত্যাদি বিভিন্ন ভারতীয় প্রদেশে মূলত ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে নববর্ষ পালিত হতো। 


অন্যদিকে আবার বহু ঐতিহাসিক মনে করেন যে বাংলা বর্ষপঞ্জিকার পরিমার্জন এর মাধ্যমে খাজনা আদায়ের ব্যবস্থা কে একটি সুষ্ঠু রূপ দেওয়ার জন্য মুঘল সম্রাট আকবর সৌর পঞ্জিকা এবং হিজরি সনের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন করেন। কিন্তু বহু ঐতিহাসিক আবার এই দাবিকে বাতিল করে দিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিকে হিন্দু ঐতিহ্যের বিক্রমী দিনপঞ্জীর সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করেন।



একথা সত্য যে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে আকবরের শাসনকালের বহু আগেও বাংলা বর্ষপঞ্জিকা এবং নববর্ষ উদযাপনের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে।


তবে তর্ক বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, বাঙালির নিজস্ব বর্ষ পঞ্জী আছে, এ তো কম গৌরবের নয়। ১ লা বৈশাখ সেই গৌরবকেই যেনো ফিরে দেখা।