ডুয়ার্সে হাতির তাণ্ডব অব্যাহত ভাঙলো একাধিক বাড়ি, ঘুম কেড়েছে মাদারিঝরা এলাকার বাসিন্দাদের




জলপাইগুড়ি,জয়ন্ত বর্মন 


শনিবার গভীর রাতে মোরাঘাট জঙ্গল থেকে ৩০-৩৫ টি হাতির দল তেলিপাড়া চা- বাগান হয়ে সাকোয়াঝোরা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদারিঝোরা এলাকায় তাণ্ডব চালায়।ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।রাতভর তান্ডপ চালিয়ে গুড়িয়ে দেয় চারটি আদিবাসী পরিবারের থাকার ঘর সহ রান্না ঘর।পাকা ঘরের দেওয়াল ভেঙ্গে লুট করে ঘরে মজুত করে রাখা ধান ও চালের বস্তা।ভাঙচুর চালায় পাশের একটি গোয়াল ঘরেও এছাড়াও বেশ কয়েকটি বাড়ির সীমানার প্রাচীর ভেঙ্গে দেয়।



স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি হস্তী শাবক প্রথমে তেলিপাড়া চা বাগান হয়ে লোকালয়ে ঢুকে যায়,এরপর সেই শাবকের পেছন পেছন গোটা দলটি গ্রামে ঢুকে যায়।এরপর শুরু হয় ব্যাপক তাণ্ডব।শিবু ওরাও নামের এক ব্যক্তির পাকা ঘর ভেঙ্গে দেয় হাতির দলটি, এরপর রাজেশ ওরাও নামের আরেক ব্যাক্তির রান্না ঘরে মজুত করা ধান সাবার করে দেয় , সাড়িতা ওরাও নামের এক মহিলার একমাত্র থাকার ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়,এছাড়াও আরো কিছু বাড়ি ও গোয়াল ঘরে ভাঙচুর চালায় হাতির দলটি।ঘরের আসবাপত্র বাসন ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।এরপর গ্রামবাসী চিৎকার শুরু করে বাজি পটকা ফুটিয়ে জঙ্গলে ফিরে যায় হাতির দলটি।



এদিকে রান্নাঘর বাসনপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সকাল থেকে না খেয়ে থাকে বেশ কয়েকটি পরিবার।


খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় তৃণমূল যুব নেতা সহিরুল ইসলাম।তিনি জানান, বনদফতরে খবর দেওয়া হয়েছিল ।তবে তারা আসার আগেই হাতির রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে ফের একবার নিজে থেকেই জঙ্গলে ফিরে যায়।বার বার লোকালয়ে হাতির আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে সেই এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বলে তাদের জন্য কিছু ত্রিপল খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।



এভাবে লাগাতার হাতির হানায় রীতিমত ক্ষুব্ধ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারেরা। সকলেই বন দফতরের কাছে ক্ষতিপূরনের দাবি সহ রাতের বেলা এলাকায় নিয়মিত টহলদারির দাবি তুলেছে।


ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে পুষ্পা ওরাও জানান, রাত দেড়টা নাগাদ সকলে ঘুমের ঘোরে ছিল হঠাৎ করে হাতির দল এসে হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়। ঘরের বাসনপত্র থেকে শুরু করে সবকিছুই নষ্ট করে দিয়েছে। দেওয়াল ভেঙ্গে ধানের বস্তা লুট করে নিয়ে গিয়েছে। আমরা চাই বনদপ্তর আমাদের ক্ষতিপূরণ দিক।


জলপাইগুড়ি অনারারী ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরীর বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকেরা বনদপ্তর এর নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে যাতে ক্ষতিপূরণ পায়,সে বিষয়ে বন দপ্তরের সঙ্গে কথা বলব।