ছেনি বাঁটালিতে প্রান পায় মনের লালন



প্রীতম ভট্টচার্য্যঃ 

" ও সে অমৃত সাগরের সূধা, সূধা খাইলে জিবের ক্ষুধা তৃষ্ণা রয় না"

বাউল তত্বে দেহ নির্বান বা মোক্ষের এক সাধন তত্ব যা দেহতত্বে পরিণত হতে এক যুগের তপস্যা লাগে।পার্থিব দেহসাধনার ভেতর দিয়ে দেহোত্তর জগতে পৌঁছোনোর মাধ্যমে। আর এটাই বাউলতত্ত্বে নির্বাণ বা মোক্ষ বা মহামুক্তির লাভ।শিল্পীর দেহতত্ত্বে তার শিল্পকে রুপ দিতে বা স্পর্শে ভালোবাসার রুপ দিতে অনেক সাধন ভজন লাগে, যেখানে অচীন শিল্পরসের অচীন পাখিকে ধরা গেলেও মন বেড়ি পড়ানো খুব কঠিন কাজ শিল্পী লালমোহন গুড়িয়ার কাছে।ছোট থেকেই সৃষ্টির সেই অচীন পাখিকে খুঁজে চলেছেন দেহরসের নিটোল অমৃতগহনে।হাওড়ার বাগনানের লালমোহন গুড়িয়ার চাকরি সূত্রে নদীয়ার কৃষ্ণনগরের ভান্ডারখোলা গ্রামে বসবাস।

৩৭ বছর চাকরি করেছেন রাজ্যপুলিশের ডি.আই.বি বোম্ব স্কোয়ার্ডে, স্ত্রী এক পুত্র এক কন্যা নিয়ে ৬৫ বছরের লালমোহনবাবু বলেন ছোট থেকেই পুতুল,মাটির কাজ,কোলাজ ছবি অাঁকতাম,কুটুম কাটাম করতাম।কোনো অার্ট কলেজের ডিগ্রী নেই আমার, প্রথাগত শিক্ষক বা প্রশিক্ষন পায়নি কোনোদিন। চাকরিসূত্রে একদিন আলাপ হয় বিশিষ্ট ঐতিহাসিক মোহিত রায়ের সহিত, তিনি আমাকে অন্নদাশংকরের লালনফকির ও তাঁর গান এই বইটি পড়তে দেন ও লালন নিয়ে কিছু কাজ করতে বলেন। 

সেই থেকেই কাঠের গুঁড়িতেই বাঁটালি দিয়ে খুঁজে চলি মনের লালন কে,কাঁঠাল,মেহগিনি,নিম, তুলসি,যখন কোনো ভালো কাঠের গুঁড়ি পায় তখন তা তুলে নিয়ে আসি আর তাতেই রুপ দিই আমার হৃদয়ের লালনকে। বহু প্রদর্শণী করেছি আমার শিল্পসম্ভার নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায়,রাজ্য হস্তশিল্পে আমি প্রথম স্থান অধিকার করি।লালন আমার সৃষ্টির ভগবান তাই আমার শিল্পসাধনার মধ্যে দিয়ে তাকে গড়ে চলেছি এই ভবের সৃষ্টির অতলসমুদ্রে। আগামী প্রজন্ম এই শিল্পরসে ডুব দিলে আরও ভালো লাগতো, ইচ্ছা আছে বাড়িতে একটা সংগ্রহশালা করার।