বিজেপির ডেপুটেশন মঞ্চ থেকে নেমেই হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিলেন বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য



সোমনাথ পাল ,গাইঘাটা : রাজনীতিতে দলবদল স্বাভাবিক বিষয়। তা সে ডান- বাম সব পক্ষই। কিন্তু তাই বলে এইরকম। প্রথমে বিজেপর ডেপুটেশন মঞ্চ থেকে তৃণমূলের আদ্যপ্রান্ত শ্রাদ্ধ করে কিছুক্ষণের মধ্যেই বেমালুম হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিলেন গ্রাম সভার এক বিজেপি সদস্য।



মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার গাইঘাটা ব্লকে।  ওই গাইঘাটা ব্লকেরই স্থানীয় ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম সভার সদস্য দীপঙ্কর গোলদার। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে ওই আসনে লড়াই করে জয়লাভ করেন। মঙ্গলবার তারই দলবদলের ঘটনায় রীতিমত শোরগোল পড়েছে এলাকায়। পাশাপাশি দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যের রাতারাতি দলবদলের ঘটনায় রীতিমতো অসস্তিতে পড়লেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।


ঘটনা এই রকম, বাঁধা হয়েছিল ডেপুটেশন মঞ্চ। লাগানো হয়েছিল মাইক। তাও আবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ।  বিষয়-সাম্প্রতিক আমফান ঝড়ে তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে টাকা নয় ছয়ের অভিযোগ।।


ডেপুটেশন মঞ্চে বাঁধা মাইকে তারস্বরে স্থানীয় থেকে তৃণমূলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের বাপ-বাপন্ত করলেন বিজেপি নেতৃত্ব। এতক্ষন সবই ঠিক চলছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের ছন্দপতন হল কিছুক্ষনের মধ্যেই। বিজেপির ডেপুটেশন মঞ্চ থেকে নেমেই বেমালুম হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিলেন গ্রামসভার বিজেপি সদস্য দীপঙ্কর গোলদার।


স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের এই দলবদলের ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে পড়লেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।


কিছুক্ষন আগেই যিনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপির মঞ্চে সুর চড়ালেন। সেই বিজেপি নেতাই মঞ্চ থেকে নেমে হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিলেন।


দল বদলের বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তার সাফ জবাব, "মোদি সরকার যে কৃষি বিল নিয়ে এসেছে তাতে সবথেকে বেশি  ক্ষতি হবে কৃষকের। এদিন গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সামনেই তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি। তৃণমূলে যোগ দিয়ে ওই নেতা আরও দাবি করেন, কৃষক পরিবারের ছেলে হয়ে তিনি কেন্দ্র সরকারের কৃষি বিল মানতে পারছেন না। দলকে জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের  উন্নয়নের শরিক হতেই তার এই সিদ্ধান্ত ।


ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্থানীয় নেতৃত্ব জানান, দীপঙ্কর বিজেপির ভাওতাবাজি সহ্য না করতে পেরে এবং কৃষি বিলে কৃষকের ক্ষতি হবে বুঝতে পেরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছে।


এদিন ওই পঞ্চায়েত সদস্যের দল বদলের ঘটনায় ধর্মপুর ১ পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা দাঁড়ালো তৃণমূল নয়, বিজেপি দুই, ও নির্দল চার। 


দলীয় নেতার দল বদলের ঘটনায় বিজেপির বারাসত জেলা সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র কান্ত দাস বলেন, দীপঙ্কর বেশ কিছুদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল। নিজের দুর্নীতি ঢাকার জন্যই তৃণমূলে যোগদান করেছে সে ।