উত্তরবঙ্গের  চাষীদের ফসলের ন্যায্য মুল্য পাওয়ার দাবী দিল্লী নিয়ে গেল স্বরাজ ইন্ডিয়া-র সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব


নয়াদিল্লি, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২০: আজ স্বরাজ ইন্ডিয়ার সর্বভারতীয় সভাপতি ও জয় কিষাণ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী যোগেন্দ্র যাদব দিল্লীর কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সাথে বৈঠক করে, উত্তর বঙ্গের ভুট্টা চাষীদের দাবী দাওয়া তুলে ধরলেন ও স্মারকলিপি দিলেন। 


শ্রী যাদবের নেতৃত্বে স্বরাজ ইন্ডিয়া-জয় কিষাণ আন্দোলনের তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ভুট্টা চাষিদের ন্যায্য মুল্য (এম.এস,পি) পাওয়ার পাশাপাশি আরও কয়েকটি রাজ্যের চাষীদের বিস্তারিত দাবী দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে ঐ প্রতিনিধি দল। 

মন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে দামের বিপর্যয়ের কারণে কৃষকরা অভূতপূর্ব আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার এবং পরিস্থিতি প্রশমিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর কাছে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে অল্প সময়ের মধ্যেই যদি ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া না হয় তবে কৃষকরা তাদের সংগ্রামকে আরও তীব্র করতে বাধ্য হবে এবং স্থানে স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ হবে।

আজ অবধি স্বরাজ ইন্ডিয়া উত্তরবঙ্গের ভুট্টা চাষীদের ফসলের এম.এস.পি– দর পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কৃষি সচিব, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সচিব, খাদ্য সচিব, উত্তর দিনাজপুর জেলার তিনজন সাংসদ, আট জন বিধায়ক, জেলা শাসক ও বিডিও-দের ৫০০-র ও বেশী চিঠি লিখেছে। গ্রাম স্তরে ইতিমধ্যে বহু সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্থানীয় প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন।

যোগেন্দ্র যাদব বলেন: "আজকের বৈঠকের পর কিছু ফলাফল আশা করা যাচ্ছে। কিন্তু যদি চাষিদের ন্যায্য দাবী অবহেলিত থাকে তবে সব জায়গায় ব্যাপক প্রতিবাদ হবে, যা কোভিড-১৯ অতিমারী চলাকালীন স্বাস্থ্য সঙ্কটের মধ্যে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হবে। কিন্তু চাষীরা তাদের ধৈর্যের শেষ সীমায় এসে পৌঁছেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী থেকে ডিএম অবধি কেউ তাদের কথা শুনছেন না। এটি মনে রাখতে হবে যে উত্তর দিনাজপুর জেলার পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যে কৃষকরা তাদের ভুট্টার ফসল এম.এস.পি থেকে অনেক নিচে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।"

স্বরাজ ইন্ডিয়া ও জয় কিষাণ আন্দোলন যে দাবীগুলি করেছে:

(ক) অবিলম্বে:
(১) দেশের সমস্ত ভুট্টা উৎপাদনকারী অঞ্চলে কৃষকদের সহজেই নাগালযোগ্য জায়গায় ভুট্টা কেনার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে;
(২) উপরোক্ত ক্রয় কেন্দ্রগুলি থেকে যাতে সমস্ত কৃষকের পুরো ভুট্টা ফসল এম.এস.পি–দরে এবং বিনা অসুবিধায় এবং বিনা আমলাতান্ত্রিক বাধায় ক্রয় করা যায় তার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ এবং কর্মী – আধিকারিক দান নিশ্চিত করতে হবে;
(৩) এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে যাতে যে কৃষকরা তাদের ভুট্টার ফসল এম.এস.পি-র চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন, তারা এই ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণের দাবী জমা দিতে পারেন এবং দ্রুত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন;
(খ) দ্রুততার সাথে:
(১) নিশ্চিত করতে হবে যে দেশের সকল ভুট্টা চাষ হওয়া অঞ্চলে ভুট্টা বিক্রীর জন্য নিয়ন্ত্রিত কৃষি বাজার পাওয়া যায়;
(২) নিশ্চিত করতে হবে যে প্রয়োজনে এই নিয়ন্ত্রিত কৃষি বাজারগুলিতে সমস্ত লেনদেন অন্ততঃ পক্ষে এম.এস.পি-তে বা তারও বেশি দামে হয়, তার জন্য প্রয়োজনে নিয়মিত নিরীক্ষণ ও ব্যাবস্থা করতে হবে;
(৩) কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী অন্নদাতা আয় সংরক্ষণ অভিযান (পি.এম–আশা)–র অধীনে ভুট্টার জন্য একটি শক্তিশালী মূল্য সহায়তা প্রকল্প ঘোষণা করতে হবে;
(৪) কেন্দ্রীয় সরকারের পি.এম–আশা–র অধীনে ভুট্টার জন্য একটি শক্তিশালী মূল্য ঘাটতি সহায়তা প্রকল্প ঘোষণা করতে হবে;