করোনা নিয়ে গবেষণা অব্যাহত। আর গবেষণায় উঠে আসছে একে একে নতুন তথ্য, ফলে বাড়ছে উদ্বিগ্ন। কিছুদিন আগেই এক দল বিজ্ঞানীর দাবি করোনা বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। 

এতদিন হু জানিয়েছিল করোনা হাঁচি, কাশির ফলে বেরিয়ে আসা ড্রপলেট থেকে জীবাণু অন্যের শরীরে ছড়ায়। কিন্তু এবার ৩২টি দেশের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী দাবি করেছেন তাঁদের হাতে পাথুরে প্রমাণ রয়েছে, যে করোনার আরও ছোট কণা বায়ুবাহিত হয়ে মানব শরীরে ঢুকতে পারে। এ ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-র সুপারিশ বদলানোর অনুরোধও করেছেন তাঁরা।ইনফেকশন ডিজিজ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সেই চিঠি। এরপরই নোভেল করোনাভাইরাসের বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সংক্রান্ত উঠে আসা তথ্যপ্রমাণকে স্বীকৃতি দিল হু।

হু-র সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল লিড বেনেডেট্টা আল্লেগ্রাঞ্জি বলেছেন, করোনাভাইরাসের বাতাসের মাধ্যমে ছড়ানোর প্রমাণ উঠে আসছে। তবে তা নিশ্চিত নয়। তিনি বলেছেন, জনবহুল স্থান-বিশেষ করে নির্দিষ্ট পরিস্থিতি, ভিড়ে ঠাসা, আবদ্ধ স্থান, বাতাস চলাচলের সুবিধাহীন স্থান, এমন ক্ষেত্রে বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে এ সংক্রান্ত প্রমাণ সংগ্রহ ও তার ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

তবে আপাতত বিজ্ঞানীদের দাবিকে উপেক্ষা না করার পথেই হাঁটল হু। গাইডলাইনে এই বিষয়টিকে জুড়ে নতুন করে সতর্ক করা হচ্ছে জনসাধারণকে।নতুন গাইডলাইনে হু-এর তরফে জানান হয়েছে, রেস্তোরাঁ ও ব্যায়ামগারের মতো আবদ্ধ পরিবেশেও করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটার ফলে বাতাস মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর কথা জানা যাচ্ছে। এছাড়াও উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না হু। হু-এর গবেষকদের মতে, একসাথে অনেক মানুষ যেখানে আছেন, সেইখানে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তের উপস্থিতি সংক্রমণ ছড়ানোর কারণ হতে পারে।

হু-এর নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, বায়বীয় সংক্রমণ রুখতে গেলে ভিড় এড়ানো প্রয়োজন। বিল্ডিংয়ে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা একান্ত সম্ভব না হলে মাস্ক বাধ্যতামূলক। এছাড়াও উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গহীন আক্রান্তদের কথা মাথায় রেখে সতর্ক হওয়া উচিত।

করোনা সংক্রমণ রুখতে গেলে প্রথমেই মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোনো বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও কমপক্ষে ৩ ফুটের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। অপ্রয়োজনীয়ভাবে মুখের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করা বন্ধ করতে হবে। জনবহুল স্থান বা বায়ু চলাচল করতে পারে না এমন জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে। কর্মক্ষেত্র হোক বা গৃহ জীবাণুমুক্ত বাধ্যতামূলক করতে হবে। এছাড়াও দেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাকে অটুট রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।