তিরুবনন্তপুরম, ৯ জুলাই, ২০২০: পঙ্কজকস্তুরী হার্বালস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড (PKHIL) আজ ঘোষণা করেছে যে কোভিড-১৯ এর রোগীদের মধ্যে জিঙ্গিভির-এইচ এর ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অন্তর্বর্তী ফলাফল আশাব্যঞ্জক। পঙ্কজকস্তুরী হার্বাল রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ জে হরীন্দ্রন নায়ারের তৈরি জিঙ্গিভির-এইচ একটি হার্বো-মিনারেল ড্রাগ যা তৈরি সাতটি উপাদান দিয়ে। কোম্পানি মনে করে এই ঘোষণা কোভিড-১৯ এর মত জটিল রোগের শস্তা চিকিৎসা হিসাবে আয়ুর্বেদের ক্ষমতাকে আরো একবার প্রমাণ করল। 

ডঃ জে হরীন্দ্রন নায়ার, প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর, PKHIL, বলেন “রোজকার অ্যালার্জি থেকে শুরু করে অটো ইমিউন রোগের মত জটিল রোগের চিকিৎসার দীর্ঘ, বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্য আয়ুর্বেদের আছে। এখনকার মত অভূতপূর্ব সময়ে, যখন পৃথিবী জুড়ে প্যান্ডেমিক হয়ে দাঁড়ানো একটা রোগের সাথে লড়াই করতে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব জরুরী, আমরা বিশ্বাস করি আয়ুর্বেদ একটা কার্যকরী এবং শস্তা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে।” 

ডবল ব্লাইন্ড সমীক্ষায় পঙ্কজকস্তুরীর নতুন ড্রাগ জিঙ্গিভির-এইচ এর ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে অ্যাডজাংক্ট থেরাপি হিসাবে ১১২ জন রোগীর উপর আর একমাত্র চিকিৎসা হিসাবে ১৩৫ জন রোগীর উপর। অ্যাডজাংক্ট থেরাপির ৯৬ জন রোগীর মধ্যে ট্রায়ালের প্রগতি হচ্ছে। তার মধ্যে ৪২ জনের পরীক্ষার ফলাফল অন্তর্বর্তী রিপোর্ট হিসাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। বিয়াল্লিশ জনের মধ্যে ২২ জনের চিকিৎসা করা হয়েছিল জিঙ্গিভির-এইচ দিয়ে আর ২০ জনকে দেওয়া হয়েছিল একটি প্লেসবো। জানা গেছে যে জিঙ্গিভির-এইচ পাওয়া ২২ জন রোগীকে চতুর্থ দিনে রিয়েল টাইম রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশন (RT-PCR) এর পর ছেড়ে দেওয়া হয়। কন্ট্রোল গ্রুপের বাকি যে ২০ জন রোগীকে প্লেসবো দেওয়া হয়েছিল তারা ৫ থেকে ১১ দিন পর্যন্ত কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়ে থাকেন। 

“এখন পর্যন্ত ফলাফল অত্যন্ত ইতিবাচক এবং ট্রায়াল চলছে,” ডঃ নায়ার বলেন। “আমরা সারা ভারতে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য এই ট্যাবলেট দিতে প্রস্তুত। এই ড্রাগ অনুমোদন পাওয়ামাত্রই আমরা সরকারী সংস্থাগুলোর সাথে মিলে উদ্যোগ নেব যাতে কার্যকরী এবং দ্রুত বিতরণের ব্যবস্থা করা যায়। সকলের জানা দরকার যে প্রোফাইল্যাকটিক চিকিৎসা হিসাবে এই ড্রাগ ব্যবহার করার ফলে জিঙ্গিভির-এইচ কোভিড-১৯ এর ছড়িয়ে পড়া আটকাতে পারে এবং তার ফলে গোষ্ঠী সংক্রমণও আটকাতে পারে।” 

জিঙ্গিভির-এইচ ট্যাবলেট কেরালা সরকারের ড্রাগ লাইসেন্স পেয়েছিল এবং তিরুবনন্তপুরমের রাজীব গান্ধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ও CSIR-NIIST তে মানব কোষের সাইটোটক্সিসিটির জন্য পরীক্ষিত হয়েছিল। পশুদের উপর প্রয়োগ নিরাপদ প্রমাণিত হওয়ার পর ক্লিনিকাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া (CTRI) থেকে ক্লিনিকাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রেশন করানো হয়। তারপর বিভিন্ন মেডিকাল কলেজের এথিকাল কমিটিগুলোর অনুমোদনক্রমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ICH-GCP স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ড্রাগটিকে র‍্যান্ডমাইজড সিঙ্গল ব্লাইন্ড প্লেসবো কন্ট্রোল্ড মাল্টি-সেন্টার ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেওয়া হয়। 

জিঙ্গিভির-এইচ এর ক্লিনিকাল ট্রায়াল করা হচ্ছে আধুনিক মেডিসিনের পরীক্ষার প্রোটোকল অনুসারেই। ক্লিনিকাল ট্রায়াল ও CRP, ESR, ইন্টারলেউকিন, IgG, IgM ইত্যাদি রক্ত পরীক্ষার পর জিঙ্গিভির-এইচ এর রক্ষণাত্মক ভূমিকা প্রমাণিত হলে ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। 

ক্লিনিকাল পরীক্ষার অন্তর্বর্তী ফলাফলের মূল্যায়ন করেছেন পাঁচ সদস্যের এক স্বাধীন পিয়ার ডেটা মনিটরিং কমিটি (DMC)। এই কমিটিতে ছিলেন: 

  • · কমিটির চেয়ারম্যান ডঃ ভি রমন কুট্টি, বিশিষ্ট এপিডেমোলজিস্ট ও ডেটা সায়েন্স বিশেষজ্ঞ, রিসার্চ ডিরেক্টর, অমলা ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার, ত্রিচুর। প্রাক্তন এমেরিটাস প্রফেসর, শ্রী চিত্র তিরুনাল ইনস্টিটিউট ফর মেডিকাল সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি এবং অনারারি চেয়ারম্যান, হেলথ অ্যাকশন বাই পিপল। 
  • · ডঃ কে পি পুলোস, প্রাক্তন অধ্যাপক, কোট্টায়াম মেডিকাল কলেজ ও জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, ইউ এস এ এবং চিফ ফিজিশিয়ান, এস ইউ টি হসপিটালস, তিরুবনন্তপুরম; 
  • · ডঃ কে জি রবীন্দ্রন, অবসরপ্রাপ্ত মেডিকাল ডিরেক্টর, দি আর্য বৈদ্য ফার্মেসি, কোয়েম্বাটোর; 
  • · ডঃ ভি এস সুগুনন, প্রাক্তন বিজ্ঞানী C ও গ্রুপ লিডার, ভাইরাল হেপাটাইটিস ল্যাবোরেটরি, রাজীব গান্ধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি, তিরুবনন্তপুরম; এবং 
  • · ডঃ আশা কামাথ, অ্যাসোশিয়েট ডিরেক্টর, PSPH, প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অফ ডেটা সাইন্স, মনিপাল অ্যাকাডেমি অফ হায়ার এডুকেশন। 

পঙ্কজকস্তুরীর R&D প্রধান ডঃ শান শশীধরন এবং ক্লিনিকাল ট্রায়াল কোঅর্ডিনেটর ডঃ কে পি শ্রীনিবাসকুমার, বিভাগীয় প্রধান, ক্লিনিকাল অপারেশনস, ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজি ও ক্লিনিকাল রিসার্চ, ইন্ডিয়া এবং এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত অন্যান্যদের ডঃ হরীন্দ্রন নায়ার ধন্যবাদ জানান। 

DMC র পিয়ার রিভিউয়ের পর পরীক্ষার ফলাফল কেন্দ্রীয় আয়ুর্বেদ, যোগ ও ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথি (AYUSH) মন্ত্রকের কাছে অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়েছে।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক এবং পূবাচল, তিরুবনন্তপুরমের গবেষক পদ্মশ্রী ডঃ জে হরীন্দ্রন নায়ার ১৯৮৮ সালে পঙ্কজকস্তুরী হার্বালস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড (PKHIL) প্রতিষ্ঠা করেন। এটি কেরালার প্রথম ISO 9000 সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত আয়ুর্বেদিক মেডিসিন প্রস্তুতকারক কোম্পানি। ২০০২ সালে ডঃ নায়ার কেরালার প্রথম সেলফ-ফাইন্যান্সড আয়ুর্বেদিক মেডিকাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন কাত্তাকাড়া, তিরুবনন্তপুরমে।

PKHIL এর ম্যানুফাকচারিং ইউনিটের চারটি ডিভিশন ৪০০র বেশি আয়ুর্বেদিক প্রোডাক্ট উৎপাদন করে। এই বিভাগগুলি হল OTC, পার্সোনাল কেয়ার, এথিকাল ক্লাসিকাল ডিভিশন। ব্রিদ ইজির মত ব্র্যান্ড ব্যবহৃত হয় শ্বাসকষ্টের সমস্যায়। গাঁটের ব্যথার সমস্যায় অর্থোহার্ব নামের অনন্য ভেষজ মেডিসিনটিও খুব জনপ্রিয়। PKHIL সম্বন্ধে আরো তথ্য পাওয়া যাবে https://www.pankajakasthuri.in/