Everything You Need to Know About Diabetes
নিঃশব্দে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে ডায়াবেটিস, জেনে নিন বাঁচার উপায়
ওয়েবডেস্ক, স্বাস্থ্য ,সংবাদ একলব্য ঃ
ডায়াবেটিস (Diabetes) একটি মারাত্মক রোগ, যা আপনাকে নিমেষেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। আপনি বুঝতেই পারবেন না। তাই আপনার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরী। ডায়াবেটিসের এতো ঝুঁকি থাকার পরেও যতো মানুষ এই রোগে আক্রান্ত তাদের অর্ধেকেরও বেশি এই রোগটি সম্পর্কে সচেতন নয়। বর্তমানে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৫৬ কোটিরও বেশি।
ডায়াবেটিস কখন হয়?
ডায়াবেটিস তখনই হয় যখন রক্তের সব চিনিকে (গ্লুকোজ) শরীর ভাঙতে ব্যর্থ হয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।
এর ফলে মানুষের কি হতে পারে?
মানুষের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক , কিডনি ফেলিওরের মতো জটিল রোগ হতে পারে। নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিডনি, মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনকি, শরীরের নিম্নাঙ্গ কেটেও ফেলতে হতে পারে।
ডায়াবেটিসের কারন :
আমাদের খাওয়া খাবার গুলির শর্করাকে ভেঙে চিনি (গ্লুকোজ) -এ রুপান্তর করে শরীর। অগ্ন্যাশয় থেকে নিসৃত ইনসুলিন হরমোন কোষগুলিকে চিনি গ্রহণের নির্দেশ দেয়। শরীর যখন ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা ঠিক ঠাক কাজ করে না রক্তের মধ্যে চিনি জমা হতে শুরু করে তখন ডায়াবেটিস হয়।
ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ :
ডায়াবেটিস দুই প্রকার, যথা- type 1 ও type 2
type -1 ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে রক্তের প্রবাহে গ্লুকোজ জমা হতে শুরু করে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন জিনগত কারণে বা অগ্ন্যাশয়ে ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো নষ্ট হয়ে গেলে এই প্রকার ডায়াবেটিস হয়।
type -2 ডায়াবেটিস
অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন না হওয়া বা ঠিক মতো কাজ না কারণে এই প্রকার ডায়াবেটিস হয়।
সাধারণত মধ্যবয়সী বা বয়স্ক ব্যক্তিরা এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ওজন বেশি অথচ বয়স কম, বসে বসে কাজ করা মানুষের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সন্তানসম্ভবা হলে পরেও অনেক নারীর ডায়াবেটিস হতে পারে।
ডায়েট, শরীর চর্চা অথবা ইনসুলিন নেওয়ার মাধ্যমে তাদের শরীরে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা গেলে তাদের type -2 ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।
ডায়াবেটিসের লক্ষন সমুহ :
- খুব তৃষ্ণা পাওয়া
- ক্লান্ত বোধ করা
- ঘন ঘন প্রস্রাব (বিশেষ করে রাতে)
- বারে বারে ক্ষুধা পাওয়া
- কোন কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া
- কেটে যাওয়া অংশ সহজে নিরাময় না হওয়া
- প্রদাহজনিত রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া
- চোখে ঝাপসা দেখা
ডায়াবেটিস কি প্রতিরোধ করা সম্ভব?
ডায়াবেটিস জেনেটিক এবং আপনার জীবন যাপনের ওপর নির্ভরশীল। তবে, রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারলে ঝুঁকিহীন।
এরজন্য সচেতনতার সাথে খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও মদ , কোল্ড ড্রিংকস , এনার্জী ড্রিংকস এড়িয়ে চলতে হবে। মসৃন সাদা আটার রুটির পরিবর্তে খেতে হবে ভুষিওয়ালা আটার রুটি। হোয়াইট পাস্তা, প্যাস্ট্রি, ফ্রিজি ড্রিংকস, চিনি জাতীয় পানীয়, মিষ্টি ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। আর স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে রয়েছে শাক সব্জি, ফল, বিন্স এবং মোটা দানার খাদ্য শস্য। আলু ছাড়া তরকারীর পরিমান বেশি খেতে হবে। ভাতের পরিমাণ কমাতে হবে। অল্প অল্প বিরতি দিয়ে খাওয়া দাওয়া করতে হবে। ওমেগা থ্রি তেল যুক্ত মাছ খেতে হবে। শরীর চর্চ্চা বা ব্যায়াম করতে হবে। ওজন কম রাখলেও চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ধীরে ধীরে সপ্তাহে আধা কেজি থেকে এক কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে হবে। ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কোলস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করতে হবে । কোলস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে হৃদ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
চিকিৎসা :
ধীরে ধীরে অনেক নতুন চিকিৎসা উদ্ভাবন হয়েছে। ডাক্তারি পরামর্শের পাশাপাশি ডায়েট মডিফিকেসন ও শারিরিক চর্চা ডায়াবেটিস ও ডায়াভেটিসের প্রভাবে চলা অন্যান্য রোগ বাগে আনা যেতে পারে। আপনার ডায়াবেটিস হলে খুব শীঘ্রই ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊