আজকে থেকে শেষ হচ্ছে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী শৈবতীর্থ জল্পেশ মেলা

SER-10,ময়নাগুড়ি,০১ মার্চ : আজ রবিবার থেকে শেষ হচ্ছে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী শৈবতীর্থ জল্পেশ মেলা। গত ২১শে ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী শৈবতীর্থ জল্পেশ মেলার উদ্বোধন করেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।

জানা যায়,জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের উত্তর ভূস্কাডাঙ্গার জল্পেশ মন্দিরে ১৫২৪ কুচবিহারের মহারাজা নারায়ণের পিতা বিশ্ব সিংহ জল্পেশ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা করেছিলেন । এবং পরবর্তীকালে তিনি ১৫৬৩ সালে মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন। এবং পরে আবার ১০০ বছর পর রাজা প্রাণ নারায়ণ ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে এই মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন। এরপর  কুচবিহারের রাজা লক্ষ্মী নারায়নের রাজত্বকাল রাজকীয় ছাতা ধরে রাখতে অস্বীকার করার পর ১৬২১ খ্রিস্টাব্দে মহীদেব রায়কত তাঁর স্বাধীনতা স্বাক্ষর করেন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করতে অস্বীকার করেন। এরপর থেকে মন্দিরটি বৈকুণ্ঠপুরের রায়কতদের তত্ত্বাবধানে ছিল। ১৮৯৯ সালের ৩০ জানুয়ারি রাজা জগেন্দ্র দেব রায়কতের স্ত্রী রানী জগদেশ্বরী দেবী এর পুনপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী শৈবতীর্থ জল্পেশ মেলা সরকারি ভাবে চলে দশ দিন। এবং এই দশ দিন মেলার পরেই আস্তে আস্তে মেলার মাঠ ফাকা হতে শুরু করে।

সপ্তদশ শতকে মন্দির তৈরির পর থেকেই জল্পেশ মন্দিরে শিব রাত্রিতে বিখ্যাত মেলার সূচনা হয়। সেই দিক থেকে এই জল্পেশ মেলা গোটা রাজ্যেরই প্রাচীন মেলাগুলির মধ্যে অন্যতম। এবং উত্তরবঙ্গের এই ঐতিহ্যবাহী জল্পেশ মেলা গোটা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় এবং জলপাইগুড়ি জেলার সবথেকে বৃহত্তম মেলা নামেও পরিচিত। এবং প্রতিবছরই শিব চতুর্দশীতে এই জল্পেশ মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে  কয়েক লক্ষ লোকের সমাগম হয়। নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য নিকটবর্তী রাজ্য সহ বিভিন্ন জেলার লোকেরা এখানে আসেন বাবা শিবের মাথায় জল ঢালতে।

 জল্পেশ মেলাকে কেন্দ্র করে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পুন্যার্থীদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মেলার মাঠে করা হয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। এবং ২৪ ঘন্টার জন্য তিনজন ডি,এস,পি ছিলেন। সাথে ছিলেন বিরাট পুলিশ বাহিনীও। দমকল, স্বাস্থ্য দপ্তর, কৃষি দপ্তর, জেলা শিল্প দপ্তর, এসজেডিএ এর তরফে  মেলার মাঠে স্টল দেওয়া হয়েছে।

জল্পেশ মন্দিরের নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখতে মেলার প্রথম দিন থেকেই মন্দির এবং মেলার আশেপাশের অংশগুলিকে সিসিটিভি আওতায় আনা হয়েছিল বলে জানান মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব। এবং গত ৯ দিনের মতো সুষ্ঠ ভাবে আজকের শেষ দিনের মেলা অর্থাৎ ১০ দিনের মেলা নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করছেন জল্পেশ মন্দির কমিটি ও মেলা কমিটি।