শুভাশিস দাশ
মোদের গরব মোদের আশা , আমরি বাংলা ভাষা ' এই বাংলা ভাষা আমাদের প্রাণের ভাষা । এই বাংলা ভাষার একটা প্রাচীন ঐতিহ্য আছে ।
বিশেষজ্ঞরা বলেন ভাষা শুধু কথা বলার মাধ্যম নয় , ভাষা একটা জাতির সংস্কৃতির ইতিহাস বহন করে ।
প্রতিটি ভাষা সেই জাতির একটা আবেগ কেও পরিচালিত করে ।
আমাদের কারো অজানা নেই একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস কিংবা উনিশ মে র কথা ।
এই বাংলা ভাষাকে রক্ষার দাবিতে একদা পূর্ব পাকিস্থানে ভাষার জন্য যুদ্ধ হয়েছিল আর অসমের শিলচরে বাংলা ভাষার রক্ষার দাবিতে প্রাণ দিয়েছিল অনেক বাংলা ভাষী মানুষ ।
দুটো আন্দোলনের আবেগ কিনতু একই সূত্র ।
এই বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করেই জন্ম হয়েছে একটি দেশ যার নাম বাংলা দেশ ।
এইবার আমার পশ্চিমবঙ্গের কথায় আসি , ভারতবর্ষে এই ভাষার অবস্থান কোথায় ?
অনেক বছর আগে থেকেই এই বঙ্গের সরকারি কাজকর্মে বাংলায় কাজ করার নির্দেশিকা জারি হলেও আদতে তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয় নি ।
পাশের দেশ বাংলাদেশের সর্বত্রই কিন্তু বাংলা চালু করেছেন সেদেশের সরকার । অবশ্য এটা তো দেশ নয় , এ টা রাজ্য আর এই রাজ্যে শুধু বাংলা ভাষার মানুষই বাস করেন না ।
তবু যেখানে মানুষ বসবাসের প্রায় সত্তর শতাংশ মানুষ বাঙালি সেখানে বাংলা ভাষা যে গুরুত্ব পাবে সে কথা দিনের মত সত্য কিন্তু আমরা কী দেখছি ?
' আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না ' কবিতাটি মনে পড়ে ? এই গোছের মানুষের সংখ্যা কিনতু বেড়ে গেছে । বাঙলা সাহিত্যের পৃষ্টপোষক অনেক ব্যক্তিই কিন্তু নিজেদের সন্তানদের অন্য কালচারে অভ্যস্ত করছেন ।
না , অন্য ভাষা শিখতে আপত্তি নেই কিন্তু নিজের ভাষার কৃষ্টি কে না বাঁচিয়ে কিন্তু বাস্তবে অন্য চিত্রে আমাদের দেখতে হচ্ছে ।
বাঙলা ভাষার সেমিনারে মঞ্চ ফাটিয়ে বক্তৃতা দিয়ে ভাষাকে লালন করা যায় না ।
ভারতের সুপ্রীম কোর্টের রায়ের অনুলিপি ছয়টি ভাষায় লেখা হবে সেখানে বাংলা নেই । এই ব্যাপারটা নিয়ে সম্প্রতি তোলপাড় কিন্তু আমরা কি এক হতে পেরেছি ?
রাজনৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গিটাই আমাদের কাছে মুখ্য আসলে আবেগী এই বাঙালি জাতি একটু বেশিই উদার নইলে বাঙলা ভাষা দিন দিন যে ভাবে দূষিত হচ্ছে তাতে অচিরেই এর কুফল আমরা হয়ত দেখতে পাব ।
অথচ আমরা ভুলেই যাই বিশ্বের দুটো দেশের জাতীয় সংগীত কিন্তু বাংলায় লেখা । এটা কম কথা ?
বাংলার যেসব কৃতী রা আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্টা করেন গেছেন তাঁদের মধ্যে প্রথমেই নাম আসবে বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের তারপর সুভাষ চন্দ্র বসু সত্যজিৎ রয় , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান , অমর্ত্য সেন প্রমুখ ।
মুজিবর রহমান বিশ্ব সভায় বাংলাতে বক্তৃতা দিয়ে বাংলাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবঙ একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সে দেশের জন্যই ।
বিদেশের অনেক জায়গায় বাংলা ভাষার চর্চা হলেও আমরা দিন দিন কেমন যেন উদাস হয়ে পড়ছি এই ভাষাকে যত্নে রাখার দায়িত্ব থেকে । সন্তান কথা শিখলে আমাদের প্রথমেই মননে নাড়া দেয় কোন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ভালো !
নিজে হয়ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষক কিন্তু সন্তান কে তো বাঙালি করা যাবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি !
ভাষার উপর কখনো কখনো সন্ত্রাসী হানা নেমে আসে , এই মুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের একত্র হতে হবে বাঙলা ভাষা রক্ষায় ।
আসলে বাঙালিকে অনেকেই ভয় করেন তাঁদের বুদ্ধিমত্তার জন্য যে কারণে ইংরেজ রা বাংলা প্রদেশ কে দু টুকরো করেছিলেন যদিও তর্কের খাতিরে আসতে পারে পাঞ্জাবও তো দুভাগ হয়েছে ! হ্যাঁ পাঞ্জাব শক্তিতে আর বাঙলা বুদ্ধিতে ।
আমাদের ফেসবুক
পেজে জয়েন হতে
ক্লিক করুন- CLICK
|
আমাদের হোয়াটসয়াপ
গ্রুপে যুক্ত
হতে ক্লিক করুন-
CLICK
|
যে কোন সংবাদ,
লেখা পাঠান sangbadekalavya@gmail.com
|
বিজ্ঞাপন দিতে
কথা বলুন- 96092 21222
|
দেখা যাচ্ছে একটা প্রচ্ছন্ন আগ্রাসী সন্ত্রাস নেমে আসছে এই বাংলা ভাষার উপর । তাই কৌশলে বাংলা ভাষাকে কোণঠাসা করবার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে । আসুন আমরা আমাদের এই মাতৃ ভাষা বাংলাকে মনে প্রাণে লালন করি কেননা এই ভাষা বিলুপ্ত হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব । হারিয়ে যাবেন আমাদের নেতাজি , রবীন্দ্রনাথ , সত্যজিৎ ! হারিয়ে যাবে অমর একুশের সেই ভাষা শহীদেরা !
Social Plugin