২০১৭ সালের ডিসেম্বর,  রাজস্থানে কাজে গিয়ে খুন হন মালদার আফরাজুল খান। গোঁটা দেশে আলোড়ন পরে গিয়েছিল। সেই মর্মান্তিক খুনের ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছিল, মানুষকে রাজ্যের বাইরে কেন যেতে হচ্ছে কাজের সন্ধানে। নোট বন্দির সময় বাংলার বাইরে কাজ করা কাজ হারানো শ্রমিকদের জন্য প্রকল্পও ঘোষণা  করেছিলেন  মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীরা কটাক্ষ করেছেন যে সময় গড়িয়েছে কিন্তু বদলায়নি কিছুই, রাজ্যে শিল্প নেই, কাজ নেই তাই পেটের দায়ে রাজ্যবাসিদের ছুটতে হচ্ছে ভিন রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় আমাদের দেশ ভারতবর্ষ, যে কেউ যেকোনো রাজ্যে যেতে পারেন কাজ করতে। কিন্তু আবার কাশ্মিরে জঙ্গিহানায় শ্রমিক মৃত্যু কি আবারও জানান দিচ্ছে রাজ্যে কাজের অভাব কে। উঠছে প্রশ্ন। 

এবার সন্ত্রাসবাদী হামলায় রাজ্যের পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যুর পর নড়ে বসল পশ্চিমবঙ্গ সরকার । শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ৯ জন শ্রমিক শ্রীনগর ও বারামুল্লা উপত্যকা থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাকি ১৩১ জনকে ফিরিয়ে আনতে দু-জন সরকারি অফিসারকে জম্মু ও কাশ্মীরে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বাংলার শ্রমিকরা ফিরে আসার জন্য সাহায্য চেয়ে যোগাযোগ করেন রাজ্য সরকারের সঙ্গে।এরপরেই বাংলার দুই উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাকে তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার তদারকির জন্য শ্রীনগরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, "সন্ত্রাসবাদী হামলায় ৫ জনের মৃত্যুর পর এই মুহূর্তে কাশ্মীরে রয়েছেন বাংলার ১৩১ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যএ ৯ জনকে ইতিমধ্যেই ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। বাকি ১২১ জন যাতে নিরাপদে, অক্ষত দেহে ঘরে ফিরতে পারেন তার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যতটা করা সম্ভব ততটাই করা হবে।"

শ্রমিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ ট্রেনের কোচের বন্দোবস্ত করেছে রাজ্য সরকার।এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যাঁরা ফিরে আসতে চান তাঁদের জন্য এই বিশেষ কোচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রমাগত হিংসাত্মক ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জম্মু ও কাশ্মীরে আর থাকতে চাইছেন না ১৩১ জন শ্রমিক। শ্রমিকদের দাবি, তাঁরা সেখানে আর মোটেই নিরাপদে নেই।  

মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, এই নারকীয় ঘটনার নিন্দা করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। মুর্শিদাবাদ থেকে কাজ করতে যাওয়া এই পাঁচ মৃত শ্রমিকের পরিবারের পাশে রয়েছে সরকার। প্রযোজনে সবরকমের সাহায্য করা হবে তাঁদের।


তথ্যসূত্র পি টি আই