একদিকে আসামের NRC এর জন্য ডিটেনশন ক্যাম্পে ১৯ লক্ষ মানুষের আশ্রয় এর কাহিনী অন্যদিকে ভোটার কার্ডে মোবাইল নাম্বার নথিভুক্তকরণ- এই দুইয়ের মাঝে এ রাজ্যে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। এমন সময় খাদ্যসাথী প্রকল্পে যে সমস্ত যোগ্য মানুষ এখনও খাদ্যসাথী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি তাদেরকে ডিজিটাল রেশন কার্ড প্রদানের আবেদন গ্রহণের জন্য বিশেষ শিবিরের আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়েছে ভোটার কার্ডে যেমন মোবাইল নাম্বার নথিভুক্ত করতে হবে, তেমনি রেশন কার্ডের জন্যও আবেদন করতে হবে- না হলে NRC থেকে বাঁচা যাবে না- যেতে হবে বাংলাদেশ।

এখানেই শেষ নয়- বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে 'বাংলাদেশি মুসলিমদের আবার বাংলাদেশে পাঠানো হবে।'-এই কথা শুনে এই রাজ্যের মুসলিম সমাজে গভীর এক আতঙ্ক দানা বেঁধেছে।

পশ্চিমবঙ্গের মােট জনসংখ্যা ২০১১-এর জনগণনা অনুসারে ৯ কোটি ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানের সংখ্যা ২ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ২০০ জন। পঞ্চদশ জনগণনা রিপাের্ট অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে সাক্ষরতার হার ৭৭.০৮ শতাংশ। আর মুসলিমদের মধ্যে এই হার ৫৭.৪ শতাংশ। মূলতঃ এই নিরক্ষরতাকে কাজে লাগিয়ে একটা দালাল শ্রেণি সক্রিয় হয়ে উঠেছে । 
সূত্রের খবর সাধারণ মানুষকে তারা বোঝাচ্ছেন নামের শেষে বাবার উপাধির সাথে সন্তানের উপাধি মিল না থাকলে তাকে বাংলাদেশ যেতে হবে। আর গ্রামবাংলায় বিশেষ করে মুসলিম সমাজের মানুষদের এই উপাধি নিয়ে ভিন্নতা রয়েছে।  এক্ষেত্রে দালাল চক্রের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা বোঝাচ্ছেন সমস্ত কাগজে উপাধি পরিবর্তন করতে হবে, না হলে NRC হলে তাকে বাংলাদেশ যেতে হবে। আতঙ্কিত হয়ে নাম পরিবর্তনের হুজুগ মেতেছেন। বিনিময়ে পরিবার পিছু কেউ ১০ হাজার তো কেউ ২০ হাজার টাকায় দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
এই বিষয়ে দিনহাটার বিশিষ্ট আইনজীবী  মিঠু সরকার (আহসান উল আলম সরকার) জানান- NRC এর সাথে পদবী পরিবর্তন কোনভাবেই যুক্ত নয়। NRC এই রাজ্যে হলে ১৯৭১ এর আগের নিজের বা পিতৃপুরুষের জমির দলিল, ভোটার লিস্ট, বিদ্যালয়ের কোন কাগজ অর্থাৎ সরকারি কোন কাগজ থাকলেই চলবে।