আছির আলী, ৪ঠা অগাস্ট ২০১৯ঃ চাকরির বাজারে যে আগুন তা দীর্ঘ কয়েক বছর থেকেই বুঝতে পারছেন বাঙালী। চাকরির শব্দটি শুনলেই একবার কেমন যেন আতকে উঠতে হয় আমাদের মত সাধারণ ঘরের বাঙালী ছেলে মেয়েদের। তবে কি কারনে এবার সরকারি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন চাকরিজীবীরা?
শুনতে অবাক লাগলেও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ইনস্পেক্টরদের ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটছে বলে জানাচ্ছেন বেঙ্গল ইনস্পেক্টরস ইউনিয়নের একটি অংশ। গত তিন বছরের পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে, ওই পদে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরে ৬০-৬৫ শতাংশ কর্মপ্রার্থী তা ছেড়ে দিয়েছেন।
যে কারনে চাকরি ছারছেন তারা-
প্রথমত, কাজের চাপ। দ্বিতীয়ত, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ইনস্পেক্টর-পদে চাকরি পেলেও পদোন্নতির সুযোগ নেই। ১৫ বছর পরে গ্রেড-পে পাওয়া যায়। তা-ও যৎসামান্য। অথচ মৎস্য বা পঞ্চায়েত কিংবা অন্য দফতরে সমতুল মযার্দার পদে যোগ দিলে পদোন্নতির অনেক সুযোগ পাওয়া যায়।
‘কাস্ট সার্টিফিকেট’ বা জাতি শংসাপত্র সংক্রান্ত কাজ করেন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ইনস্পেক্টরেরা। ৯১৬টি ইনস্পেক্টর-পদের অনুমোদন থাকলেও অর্ধেকের বেশি পদ খালি। এখন আছেন ৪৫৪ জন ইনস্পেক্টর। লোকবলের এই সমস্যা মেটাতে সহকারী ইনস্পেক্টর নিয়োগ করা হচ্ছে। সাধারণ ভাবে বিভিন্ন দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদেরই নেওয়া হচ্ছে ওই পদে। কিন্তু ‘কাজের চাপের’ কারণে অনেকে সহকারী ইনস্পেক্টরের পদ ছেড়ে দিতে চাইছেন।
এই পরিস্থিতিতে ‘কাজের চাপে’ নুয়ে পড়ছেন ইনস্পেক্টরেরা। সাধারণ শ্রেণিভুক্তদের মধ্যে যাঁরা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, চাকরি ক্ষেত্রে তাঁদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। সেই সংক্রান্ত কাজকর্মও করতে হচ্ছে ইনস্পেক্টরদের। অথচ লোকবল খুব কম। একই সঙ্গে সবুজ সাথী, ফরেস্ট পাট্টা, শিক্ষাশ্রী এবং বিভিন্ন ঋণ সংক্রান্ত কাজও করে থাকেন ইনস্পেক্টরেরা। তার মধ্যেই দু’টি পোর্টাল (অস্কার এবং ওয়েসিস) ঠিকমতো কাজ করে না। সাধারণত সেগুলি সক্রিয় হয় সন্ধ্যার পরে। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় ইনস্পেক্টরদের। কাজ শেষ করতে অফিসেই রাত গড়িয়ে যায় তাঁদের অনেকের।
ইনস্পেক্টরদের একাংশ জানান, ঋণ সংক্রান্ত কাজকর্মের পাশাপাশি জাতি শংসাপত্র আরও দ্রুত সাধারণ মানুষের নাগালে পৌঁছে দিতে চাইছেন অনেক ইনস্পেক্টর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডেটা এন্ট্রি অপারেটর দিতে পারে রাজ্য সরকার। বিষয়টি এখন অর্থ দফতরের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। দফতরের লোকবলের অভাবের কথা মানছেন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মীর জন্য অর্থ দফতরে আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত সুরাহা হবে বলেই রাজীববাবুর আশা। ‘‘লোকের অভাব রয়েছে। আমরা অর্থ দফতরকে লিখেছি। বিষয়টিতে অর্থ দফতর ছাড়পত্র দেবে বলে আশা করছি,’’ বলেন রাজীববাবু।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊