pic source: bibekbarman

সংবাদ একলব্য, ২২ আগস্টঃ  

কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার পুটিমারি গ্রামে রাজ্য সড়কের পাশেই শিল্পীর বাড়ি। বয়স ১১৩ বছরের সামান্য বেশি হবে। ষাইটোল গানের নাম উঠতে যে ছবি সামনে ভেসে ওঠে তিনি ফুলতি গিদালী। আজ বয়সজনিত কারনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন নিজের বাসভবনে। 
কোচবিহারের লােকসংস্কৃতির অন্যতম একটি প্রকরণ এই ষাইটোল। এটি মূলত ব্রত অনুষ্ঠান। মহিলারা ষাইটোল ব্রত পালনে মুখ্য ভূমিকা নিয়ে থাকেন। ষাইটোল এক লোকদেবী। হয়ত ষষ্ঠী ঠাকুরই এই ষাইটোল। কেননা ষাইটোলের বহু গানে তাঁর উল্লেখ পাওয়া যায় – 
"ষষ্ঠী মায়ের জন্মরে হইল নন্দী গোয়ালের ঘরে,
কি ষষ্ঠী মা মনদিসে ঘোরে।" 
বন্ধ্যা নারীর সন্তান লাভসহ সন্তান ঘিরে নানান সাংসারিক আকাঙ্খা ষাইটোলের ব্রতের ধারাভষ্যে সহজেই উঠে আসে। এই ব্রতে লোক কাহিনীর নায়িকা লীলাবতী বা নীলা স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে যখন দিন কাটান তাঁর জবানে উঠে আসে যেন ফুল্লরার বরোমাস্যা। রাজবংশী পরিবারে বিবাহর আগে ষাইটোল পূজা হয়(বিষ হরি) সেই পূজা তে রাত জেগে এই গান হয়।এই গানেরই শ্রেষ্ট কিংবদন্তী শিল্পী ফুলতি গিদালি। 



ব্রতটিতে গ্রাম্য কিশোরীরা হাঁটু পর্যন্ত কাপড় পরে প্রথমে ঢাকিকে বন্দনা করেন – ভাল্ কইরা বাজান রে ঢাকুয়ার সুন্দরি কমলা নাচে। সঙ্গে দোতরা, বাঁশী, মন্দিরাও বাজানো হয়। ঢাকীকে সামনে রেখে ষাইটোলের নানান বৃত্তান্ত গাওয়া হয়।
এই ষাইটোল গান করেই তিনি পেয়েছিলেন বঙ্গরত্ন। ফুলতি গিদালীর মৃত্যুর সাথে সাথে একটা ইতিহাসের যবনিকা পতন হল।