দিদির জনসংযোগ প্রকল্প এবং কাট মানি প্রসঙ্গ
শুভাশিস দাশ

দু হাজার এগারো সালটা পশ্চিম বঙ্গের কপালকে এভাবে ঘুরিয়ে দেবে তা কেউ আঁচ করতে পারেনি । বাম জামানার অবসান এভাবে হবে এটাও স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল এগারোর ভোটের ফল বেরুনোর পর ।
কী এমন ঘটেছিল ?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বাম রাজত্বের শেষ দিকে যে অরাজকতা শুরু হয়েছিল তারই ফল এই রাজত্ব পতনের ।
মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বাস করেছিলেন এবং বামফ্রন্টের বিকল্প হিসেবে ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের জনগণ ।
সেসময় দিদি ভায়ের যে ভাব মূর্তি কাজ করেছে তা জেতার বছর খানেক পরই একেবারে নব্বই ডিগ্রি ঘুরে গেছে ।
বাংলার উন্নয়ন নিয়ে বিস্তর তর্ক চলতে পারে কিন্তু পশ্চিম বঙ্গে উন্নয়ন যে হয়নি এটা না বললে সত্যের অপলাপ হবে । তবে উন্নয়ন করতে গিয়ে তলে তলে যে খাল নেতারা কেটেছে তা দিদির হয়ত জ্ঞাত ছিল না ফলে আস্তে আস্তে জন সমর্থন হারিয়ে বিগত লোকসভার নির্বাচন বিজেপি কে জায়গা করে দিয়েছে ।
মানুষ কিন্তু এবার তৃণমূল বিরোধী ভোট প্রয়োগ করেছে ।
নেতাদের উদ্ধত আচরণ এবং জনসংযোগ বিছিন্ন হবার কারণে এই বিপর্যয় এটা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ দের অভিমত ।
লোকসভার এই হালের পর দলের হাল ফেরাতে দিদি নতুন কৌশল নিয়েছেন । তিনি জেনে গেছেন তাঁর দলের অধিকাংশ নেতাই কোন না কোন ভাবে কাট মানি খেয়েছেন । তাই তো তিনি সততায় ভর করে বলতে পারেন যাঁরা কাট মানি খেয়েছেন তাঁরা তা ফেরত দিন ।
এই রাজ্যের যা পরিস্থিতি তাতে মানুষ বিকল্প যে খুঁজছে তা সম্প্রতি লোকসভার ভোটে প্রমাণ মিলেছে। এর ফলে তৃণমূল সুপ্রিমো জনসংযোগ বাড়ানোর জন্যে ডাক দিয়েছেন তাঁর দলের নেতা কর্মীদের ।
দিদি কে বলো ' গোছের টোটকা কতটা খাবে তা আগামী পুর নির্বাচনে আঁচ পাওয়া যাবে । কেননা তৃণমূলের এই ক বছরের জামানায দুর্নীতি এমন ভাবে বাসা বেঁধেছে যা থেকে বেরিয়ে আসা সহজ হবে না । বাম আমলে শেষ দিকের চিত্র এর কাছে ফিকে হয়ে আসে ।
দেখা যাক কতটা স্বচ্ছতা নিয়ে আবার জনগণের মন জয় করতে পারে তৃণমূল ! তবে এত কিছুর পর ও কিনতু বন্ধ হয়নি সংঘর্ষ কিংবা হয়রানি ।
গণতন্ত্রে মানুষই সব তাই মানুষ কতটা সাড়া দেবে এটা দেখার জন্যে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী একটা স্বচ্ছ নির্বাচন ।