টেট ইস্যুতে জাতীয় স্তরের আন্দোলনে UUPTWA-র স্লোগানে মুখরিত দিল্লী
গৌতম সাহা, দিল্লী:
"নাহি রুকেঙ্গে, নাহি ঝুকেঙ্গে, নাহি ছোড়েঙ্গে মান.....জান কি পরোয়া থোড়ি করে, হ্যাম হ্যায় উস্থিয়ান"
UUPTWA সংগঠনের বলিষ্ঠ স্লোগানে আজ মুখরিত হল দিল্লীর যন্তর মন্তরের ধর্ণামঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি বাঁচাতে টেট পরীক্ষায় দুবছরের মধ্যে পাশ করতেই হবে। তা নাহলে তাদের চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর নিতেই হবে। এই রায়ের পর দেশের প্রায় ৫০ লাখের বেশি শিক্ষক- শিক্ষিকা চাকরি হারাতে চলেছেন যদি না তারা আগামী দু বছরের মধ্যে টেট পরীক্ষায় পাশ করেন। এরকম একটি রায়ের পর আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হয়েছে সারা ভারতের শিক্ষক মহলে। কারণ এত বছর পর টেট পরীক্ষায় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে পাশ করাটা একটু যে চাপের হয়ে যাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া সঠিক যোগ্যতায় তারা ২০০৯ সালের টেট শুরুর আগেই নিযুক্ত হয়েছেন। বিশেষত সিনিয়র শিক্ষকরা যখন পড়াশোনা করার অভ্যাস অনেকদিন হারিয়েছেন তখন টেট পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়াটা কিছুটা সমস্যা তৈরী করবে বলেই তাদের ধারণা।
এই ধর্ণায় উপস্থিত ছিলেন তেলেঙ্গানা,বিহার, ঝাড়খন্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা সহ আরও কয়েকটি রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকগণ।
মূলত সর্বভারতীয় প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন AIPTF (অখিল ভারতীয় প্রাথমিক শিক্ষক সংঘ) এর ডাকে সাড়া দিয়ে কয়েক হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়ে আজ দিল্লীর যন্তর মন্তরে ধর্ণা কমর্সূচী আয়োজিত হলো। এই কর্মসূচীতে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে সংগঠনের নেতৃত্ব এক সুরে বাধ্যতামূলক টেট পরীক্ষার এই রায় এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। সংগঠনের নেতৃত্ব সামগ্রিক প্রাথমিক শিক্ষকদের আশ্বাস দেন যে এই বিষয়ে তারা সমস্ত রকম লড়াই এর জন্য প্রস্তুত আছেন। টেট ইস্যুতে কোন শিক্ষকের চাকরি এই ভাবে হারাতে দেবেন না তারা। ইতিমধ্যে AIPTF নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী মাননীয় ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে গতকালই সৌজন্য সাক্ষাত ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। টেট ইস্যুটি নিয়ে কেন্দ্র সরকার কে ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান সর্বভারতীয় এই সংগঠন।
ইতিমধ্যেই টেট ইস্যুটি সর্বভারতীয় একটি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে কারণ এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১৩ জন সাংসদ কে লোকসভায় বা রাজ্যসভায় বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য কেন্দ্র সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দেখা গেছে। তবে শিক্ষক মহলের ধারণা সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন বা কয়েকটি রাজ্য সরকারকেও রিভিউ পিটিশন করতে দেখা যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকেই সমগ্র দেশের শিক্ষকমহল এমনকি কেন্দ্র সরকারও তাকিয়ে আছেন। তাই সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পরই কেন্দ্রের তরফ থেকে একটি ইতিবাচক ভূমিকা নিতে দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাই সামগ্রিক ভাবে কোর্টে ফয়সালা বা কেন্দ্রের অর্ডিনান্স এই দুটি রাস্তাই এই বিষয়ে একটি সমাধানের সূত্র হয়ে উঠবেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক মহল। এই বিষয়ে কোন সমাধান না হলে AIPTF নেতৃত্ব আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে রামলীলা ময়দানে বিরাট একটি শিক্ষক সমাবেশ করবেন বলে আগাম হুমকি দিয়ে রাখলেন।
আজকের এই সমাবেশে কয়েক হাজার শিক্ষক দিল্লীর যন্তর মন্তরে সমবেত হন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এখন দেখার বিষয় কোন সূত্রে দেশের লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি জীবন সুনিশ্চিত হয়।
টেট ইস্যুতে সর্বভারতীয় এই ধর্ণা ও বিক্ষোভ কর্মসূচীতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কয়েকশো প্রাথমিক শিক্ষক- শিক্ষিকা নিয়ে যোগদান করেন বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকদের নয়নের মণি UUPTWA ( উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন) সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষ, সহ সভাপতি চন্দন চ্যাটার্জি, সম্পাদক ভাস্কর ঘোষ অনেক নেতৃত্ব উপস্থিত হন। সংগঠনের তরফ থেকে সর্বভারতীয় এই ধর্ণা কর্মসূচীতে সংগঠনের তরফ থেকে ভাস্কর ঘোষ এই আন্দোলনের তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার বিষয়গুলি তুলে ধরেন। আইনের লড়াই বা রাস্তার লড়াই সর্বত্রই তাদের প্রিয় সংগঠন UUPTWA গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন বলে দৃঢ়তার সঙ্গে সংগঠনের বক্তব্য তুলে ধরেন।
.webp)
.webp)
.webp)
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊