টাইফুন কালমায়েগির তাণ্ডবে বিপর্যস্ত ফিলিপাইন: ৫২ জন নিহত, ১৩ জন নিখোঁজ
ফিলিপাইনে টাইফুন কালমায়েগির আঘাতে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেবু প্রদেশ, যা এখনও আগের ভূমিকম্পের পর পুনরুদ্ধারের পথে ছিল।
টাইফুনটি বুধবার পালাওয়ান দ্বীপের উপকূলে ঘণ্টায় ১২০ কিমি বেগে আছড়ে পড়ে। প্রবল বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ার ফলে নদী ও ঝর্ণা প্লাবিত হয়েছে, বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। সেবুতে অনেক মানুষ তাদের বাড়ির ছাদে আটকে পড়েছেন, রেড ক্রস শত শত সাহায্যের ফোন পেয়েছে।
সেবুর গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো বলেন, “আমরা উদ্ধারের জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, কিন্তু আকস্মিক বন্যা সবকিছু বদলে দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, দীর্ঘমেয়াদী খনি প্রকল্প এবং দুর্বল বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এই দুর্যোগের মধ্যে ফিলিপাইনের বিমান বাহিনীর একটি সুপার হুয়ে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ে, যাতে ছয়জন কর্মী নিহত হন। তারা আগুসান দেল সুর প্রদেশের লোরেটো শহরের কাছে টাইফুন-দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে যাচ্ছিলেন। পূর্ব মিন্দানাও সামরিক কমান্ড জানিয়েছে, নিখোঁজ কর্মীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
- সেবু প্রদেশকে “রাজ্য দুর্যোগ এলাকা” ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে ত্রাণ তহবিল দ্রুত ব্যবহার করা যায়।
- ভূমিকম্পে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষকে শক্তিশালী আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, যার ফলে অনেক জীবন রক্ষা পেয়েছে।
- ৩৮৭,০০০ এরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, ১৮৬টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, এবং ৩,৫০০ যাত্রী ও ট্রাক চালক বন্দরে আটকা পড়েছেন।
সেবুর গভর্নর নিম্নমানের নির্মাণকাজ ও দুর্বল প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের তদন্ত হওয়া উচিত এবং প্রাণহানির জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে।
ফিলিপাইন প্রতি বছর প্রায় ২০টি টাইফুন ও অসংখ্য ভূমিকম্পের মুখোমুখি হয়। এখানে কয়েক ডজন সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে, যা এটিকে বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊