নলেন গুড়ের সাধ মারছে প্লাস্টিকের কলসি! স্বাদ-স্বাস্থ্য—দু’দিকেই বিপদের আশঙ্কা, সতর্ক করলেন চিকিৎসকরাও
অণ্ডাল:
শীত মানেই নলেন গুড়ের মরশুম। পাটালি, ঝোলা গুড় থেকে শুরু করে নলেন গুড়ের মিষ্টি—শীতকালীন রসনার মূল আকর্ষণই এই গুড়। কিন্তু যে নলেন গুড় আমরা ভালোবেসে খাই, তা কতটা খাঁটি ও নিরাপদ—সেটা হয়তো অনেকেই জানেন না। কারণ, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রথাগত পদ্ধতিতেই আজ বদল এসেছে। মাটির হাঁড়ির বদলে বহু ‘শিউলি’ এখন ব্যবহার করছেন প্লাস্টিকের কলসি। আর সেখানেই শুরু সমস্যার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগে যেখানে খেজুর রস তুলতে মাটির হাঁড়ি ব্যবহার করা হত, সেটিকে প্রতিদিন ধুয়ে আবার আগুনে পুড়িয়ে জীবাণুমুক্ত করা হতো। প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং পরিশ্রমসাধ্য হওয়ায় অনেকেই এখন সহজপথ—প্লাস্টিকের কলসি—অবলম্বন করছেন। প্লাস্টিকের পাত্র হালকা, ধোয়া সহজ এবং দামও তুলনামূলক কম। তাই ক্রমশ মাটির হাঁড়িকে সরিয়ে তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক।
‘শিউলিদের’ দাবি—প্লাস্টিক ব্যবহারেও নলেন গুড়ের স্বাদ নষ্ট হয় না, তবে স্থানীয়রা একেবারেই একমত নন। তাঁদের মতে, প্লাস্টিকের কলসিতে রসের স্বাদ বদলে যায়, নলেন গুড়ের খাঁটি সুবাসও হারিয়ে যায়। শুধু স্বাদ নয়, শরীরের উপর পড়ছে ভয়ঙ্কর প্রভাব।
চিকিৎসকরাও সতর্ক করছেন—প্লাস্টিকের কলসি একেবারেই নিরাপদ নয়। শীতকালে রাতে খেজুর রস সংগ্রহের সময় তাপমাত্রার পরিবর্তন ও রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নিম্নমানের প্লাস্টিকে থাকা ক্ষতিকর যৌগ খাবারে মিশে যেতে পারে। এর ফলে রস বা গুড়ের মান যেমন নষ্ট হয়, তেমনই দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারসহ একাধিক রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
সব মিলিয়ে, সুবিধার জন্য প্রথাগত পদ্ধতি বাদ দিয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নলেন গুড়ের খাঁটি স্বাদ হারানোর উদ্বেগ। নলেন গুড়ের ‘সাধ’ রাখতে হলে তাই মাটির হাঁড়িতে ফেরারই আহ্বান খাদ্যরসিকদের বড় অংশের।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊