চীনা নাগরিকদের সঙ্গে বাংলাদেশি নারীদের বিয়ের নামে মানব পাচার! সতর্কতা ও বাস্তবতা
বাংলাদেশে চীনা পুরুষদের সঙ্গে বিয়ের নামে একাধিক নারী পাচারের অভিযোগ সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। মাত্র কয়েক সপ্তাহের পরিচয়, ভাষাগত অজ্ঞানতা, ভয়েস ট্রান্সলেটর নির্ভরতা—এইসব উপাদান নিয়ে গড়ে উঠছে সম্পর্ক, যা শেষ পর্যন্ত বিপজ্জনক পরিণতির দিকে যাচ্ছে। চীনা দূতাবাস নিজেই ২৫ মে ২০২৫ তারিখে একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে, যেখানে তাদের নাগরিকদের অনলাইন ডেটিং, সোলমেট এপ্স, এবং বিদেশি স্ত্রী কেনার মতো স্ক্যামে না জড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই সতর্কবার্তার পেছনে রয়েছে বাস্তব অভিজ্ঞতা—চীনা পুরুষরা বাংলাদেশে এসে ধর্ম গ্রহণ করে, সম্পর্ক গড়ে তোলে, এবং বিয়ে করে নিয়ে যায়। পরে জানা যায়, অনেক নারীকে চীনের গ্রামাঞ্চলে বয়স্ক পুরুষদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়, অথবা জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। এক সন্তান নীতির কারণে চীনে নারীর অভাব দীর্ঘদিনের সমস্যা, এবং এই অভাব পূরণে বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত, পাকিস্তানের দরিদ্র নারীদের টার্গেট করা হচ্ছে।
Tick Talk বা অন্যান্য বেনামী এপ্লিকেশন ব্যবহার করে সম্পর্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। অনেক নারী, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা, এসব অ্যাপসে প্রেমের খোঁজে যুক্ত হচ্ছেন। ইউটিউব বা ফেসবুকের বিজ্ঞাপন দেখে তারা এসব অ্যাপসে প্রবেশ করছেন, এবং অল্প সময়ের মধ্যেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন—যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক তরুণী, সুরমা, মাত্র এক মাসের পরিচয়ে এক চীনা নাগরিককে বিয়ে করেছেন। কেউ কারো ভাষা বোঝেন না, ইংরেজিও জানেন না, ভয়েস ট্রান্সলেটর দিয়ে কথা বলেন। এমন সম্পর্কের ভিত্তিতে বিয়ে, এবং বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপদের কারণ হতে পারে।
একাধিক কেসে দেখা গেছে, বিয়ের পর মেয়েরা চীনে গিয়ে পাচারের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ পালিয়ে ফিরে এসেছেন, কিন্তু অনেকেই এখনও বন্দি। এমনকি, নিজের খালাতো বোনকেও বিয়ে দিয়ে চীনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
চীনা দূতাবাস সরাসরি স্বীকার না করলেও, তারা বলেছে—চীনা নাগরিকরা স্ক্যামে পড়তে পারেন, এবং “বিদেশি স্ত্রী কেনা” একটি বিপজ্জনক ধারণা। তারা অনলাইন ডেটিং এবং বেনামী এজেন্টদের ফাঁদে না পড়ার আহ্বান জানিয়েছে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊