বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নাগরিক সোনালী খাতুনসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশু এবং আরও একজন প্রাপ্তবয়স্ক। এই মামলাটি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে মানবাধিকার ও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জটিলতার নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
সোনালী খাতুন, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বাসিন্দা, দিল্লিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন। তাঁর পরিবারসহ মোট ছয়জনকে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। যদিও তাঁদের কাছে আধার কার্ডসহ ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ ছিল, তবুও দিল্লি পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশে পুশব্যাক করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল হক ২৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন। প্রসিকিউটর বলেন, “শুনানিতে অভিযুক্তরা যদি দোষ স্বীকার করে, তাহলে তাঁদের ভারতে প্রত্যাবর্তনের পথ সহজ হবে।”
বাংলাদেশের আদালত ইতিমধ্যে ভারতীয় হাইকমিশনকে কূটনৈতিক ও আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে সোনালী খাতুন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে ভারতে ফেরত পাঠানো যায়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও ঋতব্রত মিত্রর বেঞ্চ রায় দিয়েছেন যে, ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া বেআইনি। আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
মানবাধিকার কর্মীরা এই ঘটনাকে “গভীর উদ্বেগজনক” বলে অভিহিত করেছেন। তাঁরা বলছেন, “ভারতীয় নাগরিকদের পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।”
এই মামলা শুধু একটি সীমান্ত-সংক্রান্ত ঘটনা নয়, বরং এটি দুই দেশের মধ্যে নাগরিকত্ব, মানবাধিকার এবং আইনি স্বচ্ছতার প্রশ্নকে সামনে এনেছে। ২৩ অক্টোবরের শুনানি এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড় আনতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊