Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Trump pharma tariff: ভারতের রপ্তানি কি বিপদের মুখে?

ট্রাম্পের ফার্মা ট্যারিফ: ভারতের রপ্তানি কি বিপদের মুখে?

Trump pharma tariff, India pharmaceutical exports, generic drugs India, US drug import policy, branded drug tariff, Indian pharma companies, US-India trade, low-cost generics, Trump 2025 tariff, DGCI&S pharma data, Zydus Dr Reddy Sun Pharma, Ministry of External Affairs India, global pharma trade, US import tariff, pharmaceutical manufacturing US


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্টযুক্ত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের উপর ১০০% ট্যারিফ আরোপ করা হবে। তবে যেসব কোম্পানি আমেরিকায় ওষুধ উৎপাদন কারখানা নির্মাণ করছে বা নির্মাণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, তাদের জন্য এই ট্যারিফ প্রযোজ্য হবে না। ট্রাম্পের ভাষায়, “IS BUILDING” বলতে বোঝানো হবে ‘breaking ground’ বা ‘under construction’ অবস্থায় থাকা প্রকল্প।

এই ঘোষণার ফলে বিশ্বজুড়ে ফার্মা কোম্পানিগুলোর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে, যদিও রপ্তানি মূলত জেনেরিক ওষুধের উপর ভিত্তি করে, তবুও এই নীতির প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্যাটিস্টিক্স (DGCI&S) অনুযায়ী, FY2025-এ যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল রপ্তানি হয়েছে ৯.৮ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রপ্তানির প্রায় ৩৯.৮%। এই রপ্তানির মধ্যে রয়েছে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ইনজেকশন, অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন থেরাপি, ক্যানসার ও ভাইরাল সংক্রমণের ওষুধ, ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, ব্যথানাশক, এবং আরও অনেক ধরনের জেনেরিক ওষুধ।

বিশ্লেষক সংস্থা GTRI-এর মতে, ভারতের এই অফ-পেটেন্ট ও কম খরচের জেনেরিক ফোকাস যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্যারিফ নীতির ধাক্কা থেকে কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে। তবে তারা সতর্ক করে দিয়েছে যে, ‘ব্র্যান্ডেড’ ওষুধের সংজ্ঞা নিয়ে এখনও স্পষ্টতা নেই। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করছে।

ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রপ্তানির বড় অংশ আসে কিছু শীর্ষ ফার্মা কোম্পানির কাছ থেকে। এর মধ্যে রয়েছে জাইডাস, ড. রেড্ডি’স, সান ফার্মা, সিপলা, লুপিন, অরোবিন্দো, গ্লেনমার্ক, হেটেরো, ইউজিয়া, গ্ল্যান্ড ফার্মা, এমএসএন ল্যাবস, আলকেম, অ্যালেমবিক, অ্যামনিল, মাইলান, এবং আরও অনেকে। এই কোম্পানিগুলো মিলে মোট রপ্তানির প্রায় ৭০% সরবরাহ করে।

বিশ্বজুড়ে এই নীতির প্রভাব আরও ব্যাপক হতে পারে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ফার্মাসিউটিক্যাল আমদানি হয়েছে ২১২.৮২ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে আয়ারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানি—যারা মূলত উচ্চমূল্যের ব্র্যান্ডেড ওষুধ সরবরাহ করে—সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি চুক্তি রয়েছে যা ১৫% ট্যারিফ সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ইউরোপীয় ফার্মা সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে যে, এই ধরনের ট্যারিফ রোগীদের জন্য জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা পেতে বাধা সৃষ্টি করবে।

অস্ট্রেলিয়াও এই নীতির বিরোধিতা করেছে। দেশটি ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১.৩৫ বিলিয়ন ডলারের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রপ্তানি করেছে। অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার বলেছেন, এই ট্যারিফ আমেরিকান ভোক্তাদের স্বার্থের পরিপন্থী।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের রপ্তানিকারকরা ও নীতিনির্ধারকরা যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী আইনি ব্যাখ্যার অপেক্ষায় রয়েছেন। ভারতের জেনেরিক মডেল হয়তো কিছুটা সুরক্ষা দেবে, তবে পুরো রপ্তানি কি নিরাপদ থাকবে, নাকি কিছু অংশ ট্যারিফের আওতায় পড়বে—তা নির্ভর করবে ওয়াশিংটনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের উপর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code