দুর্গা পুজা আসতেই ঢাকীপাড়ায় ঢাক সারাতে ব্যস্ত ঢাকী শিল্পীরা
দুর্গা পুজা আসতেই ঢাকীপাড়ায় ঢাক সারাতে ব্যস্ত ঢাকী শিল্পীরা। পুজো আসে আর পূজো যায়। অন্যকে আনন্দ দিতে ব্যস্ত থাকে এই ঢাকি শিল্পীরা। বাঙালির শ্রেষ্ঠ পূজা দুর্গা পূজা। আর সেই দুর্গাপূজায় পরিবার থেকে অনেক দূরে থাকতে হয় এদের। শুধুমাত্র বেশি অর্থ উপার্জনের জন্যই এরা পূজোর কয়েকদিন দেশের বিভিন্ন জায়গার মন্ডপে মন্ডপে পাড়ি দেয়। আমাদের প্রতিনিধি এরকম একটি ঢাকী পাড়ায় উপস্থিত হয়ে তাদের জীবনের কিছু কথা শুনলেন।
আমরা আজকে পাখিরা পাড়ার এইসব মানুষদের কিছু কথা শোনাবো। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না ব্লকের পরমানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হরিদাসপুর গ্রামে অবস্থিত এই পাখিরা পাড়া। এই পাড়ার প্রায় দেড়শটি পরিবার এই বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তাদের জীবিকা অর্জন করে। পূর্বপুরুষের হাত ধরে এই পাখিরা পাড়ার প্রত্যেকটি পরিবারের মানুষ ঢাক বাজিয়ে তাদের পরিবারের জীবন যাপন অতিবাহিত করে। কিন্তু বর্তমান সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমানে অনেকে তাসা পাটি বাজিয়েও অর্থ উপার্জন করে। সারা বছর স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ছোটখাটো পূজার্চনায় তাদের ডাক পড়ে। কিন্তু দুর্গাপূজা বাঙালির শ্রেষ্ঠ পূজা। সবাই চায় এই সময় একটু উপার্জনের হারকে বাড়াতে।
তারা মনে করেন গ্রাম অঞ্চলে কাজ করে যে অর্থ পাওয়া যায় বিদেশে এই কয়েক দিনের জন্য গেলে অনেক বেশি উপার্জন করা যায়। তাই এইসব ঢাক শিল্পী কিংবা তাসা পার্টিরা পুজোর প্রাক্কালে ব্যাঙ্গালোর, দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই প্রভৃতি জায়গায় পাড়ি দেয়। এই পাখিরা পাড়ার এতগুলো পরিবার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের মধ্যে দু তিন জন হয়তো সরকারি প্রকল্প লোকশিল্পীর ভাতা পায়। আর অন্যান্য পরিবার আজও সরকারের কাছে তাদের ভাতা পাওয়ার আশায় দিন গুনছে। দুর্গ পুজোর ৪ থেকে ৫ দিন আগে থেকেই তারা দেশ-বিদেশে পাড়ি দেয়। পাখিরা পাড়ার এইসব শিল্পীরা তারা দুর্গ পুজোয় যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে তাদের বাদ্যযন্ত্র সারিয়ে তারা কিছুটা অভ্যাস করে নিচ্ছে।
স্বপন পাখিরা জানান পূর্বপুরুষদের হাত ধরে তিনি প্রায় ৩৮ বছর ধরে ঢাক বাজাচ্ছেন। প্রায় গত ১৫ বছর ধরে তিনি দুর্গাপূজায় দেশে না বাজিয়ে বাইরে বেশি অর্থের আশায় বাজাতে যান। তিনি এ বছর ব্যাঙ্গালোরে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন পরিবারের মানুষদের আনন্দ দিতে পুজোয় পারিনা। আমরা পেটের তাগিদে বেশি অর্থের আশায় বিদেশে চলে যাই ঢাক বাজাতে। সূর্য পাখিরা জানান পূর্বপুরুষের হাত ধরে আমরা এই বাদ্যযন্ত্রকে জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছি । আমরা প্রত্যেকেই গরিব পরিবারের মানুষ। তাই সরকারের কাছে কিছু অনুদান প্রার্থনা করছি। পুজোর কটা দিন সবার ভালো কাটুক এই প্রার্থনা করি আমরা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊