শিলিগুড়িতে ঢাকির ভিড়-আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মাঝেও চাপা দুশ্চিন্তা শিল্পীদের
শিলিগুড়ি: দুর্গাপূজার উৎসবের প্রাণভোমরা হলেন ঢাকিরা। ঢাকের বাদ্যি ছাড়া বাঙালির এই শ্রেষ্ঠ উৎসব যেন অসম্পূর্ণ। প্রতি বছরের মতো এবারও পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকেই শহর শিলিগুড়ির টাউন স্টেশন প্রাঙ্গণ রূপ নিয়েছে ঢাকিদের মিলনমেলায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া, মালদা, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম ও বাঁকুড়ার মতো বিভিন্ন জেলা থেকে এসে হাজির হয়েছেন শতাধিক ঢাকি শিল্পী, কিন্তু পুজোর আনন্দের মাঝেই তাঁদের বুকভরা দুশ্চিন্তা। কারণ, উৎসব শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত অনেকের হাতেই বায়না এসে পৌঁছয়নি।
পূজার কাজ না জোটায় বাধ্য হয়েই এই শিল্পীরা খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। পরিবার-পরিজন থেকে বহু দূরে এসেও যদি খালি হাতে ফিরতে হয়, সেই আশঙ্কাতেই দিন গুনছেন তাঁরা।
খালি হাতে ফেরার ভয়, কঠিন সংসার চালানোর দুশ্চিন্তা
ঢাকিদের এই উদ্বেগের ছবিটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে তাঁদের কথায়। কমল বৈষ্ণব নামে এক ঢাকি জানান, "ছয় বছর ধরে ঢাক বাজাই। প্রতি বছরই শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনে আসি। কিন্তু এবারে এখনও পর্যন্ত একটাও বায়না মেলেনি। রাতটা স্টেশনের আকাশের নিচেই কাটাতে হচ্ছে। খালি হাতে ফিরলে সংসার চলবে কীভাবে, সেই চিন্তাই ভর করছে মনে।"
আশঙ্কা আরও গভীর প্রবীণ ঢাকি বিকাশ মাইতির কথায়। তিনি বলেন, "আমাদের সারা বছরই প্রায় ঘরে বসে থাকতে হয়। শুধু দুর্গাপূজা বা কালীপুজোর সময়েই কাজ জোটে। এবারে যদি বৃষ্টির কারণে বা অন্য কোনো কারণে বায়না না হয়, তাহলে পুজোর পর সংসার চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।"
আশার আলো ষষ্ঠীর অপেক্ষায়
শারদ উৎসবের ঝলমলে আবহে যখন দর্শনার্থীরা মণ্ডপে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন, তখন সেই আনন্দের স্পন্দন জোগানোর কারিগর এই শিল্পীরাই রয়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। তবুও তাঁরা আশার আলো ছাড়েননি। তাঁদের বিশ্বাস, ষষ্ঠীর সকাল থেকেই একে একে বিভিন্ন ক্লাব ও পূজামণ্ডপ থেকে ডাক আসবে। আর সেই সঙ্গেই তাঁদের ঢাকের তালে জমে উঠবে শিলিগুড়ির দুর্গোৎসবের আসল ছন্দ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊