যোগমুদ্রায় আবিষ্কৃত ১০০০ বছর পুরনো কঙ্কালের ডিএনএ পরীক্ষায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য
গুজরাটের মেহসানা জেলার ভদনগরে ২০১৯ সালে একটি ব্যতিক্রমী পুরাতাত্ত্বিক আবিষ্কার ঘটে—একটি ১০০০ বছর পুরনো কঙ্কাল, যা যোগমুদ্রায় বসে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়। সম্প্রতি এই কঙ্কালের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে লখনউয়ের Birbal Sahni Institute of Palaeosciences-এ। পরীক্ষায় উঠে এসেছে একাধিক ঐতিহাসিক তথ্য, যা ভারতের প্রাচীন বৌদ্ধ ঐতিহ্য এবং কেন্দ্রীয় এশিয়ার সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ইঙ্গিত দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কঙ্কালটির ধ্যানমগ্ন ভঙ্গিমা ও অবস্থান প্রমাণ করে যে এটি সম্ভবত কোনো সাধু-সন্ন্যাসীর, যিনি জীবিত অবস্থায়ই ‘সমাধি’ গ্রহণ করেছিলেন। এই ধরনের সমাধি-মুদ্রায় কঙ্কাল ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল—এ পর্যন্ত মাত্র চারটি উদাহরণ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে এটি অন্যতম।
ডিএনএ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কঙ্কালের জিনগত বৈশিষ্ট্য বর্তমান উত্তর গুজরাট অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় এশিয়ার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্ভাব্য সংযোগের ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে, যা প্রাচীনকালে এই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের প্রমাণ বহন করে।
যদিও ভদনগরে ₹৪০০ কোটি ব্যয়ে একটি আধুনিক পুরাতত্ত্ব জাদুঘর নির্মিত হয়েছে, এই ঐতিহাসিক কঙ্কালটি এখনও সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়নি। এটি এখনও একটি অস্থায়ী তাঁবুতে রাখা আছে, যা সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
- কঙ্কালটি ৯ম–১০ম শতাব্দীর বলে অনুমান করা হচ্ছে।
- এটি একটি স্তূপের নিকটে পাওয়া গেছে, যা বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থাপত্যের অংশ।
- দ্বিতীয় একটি কঙ্কাল, প্রায় ২০০০ বছর পুরনো, একই এলাকায় পাওয়া গেছে।
এই আবিষ্কার শুধু গুজরাট নয়, সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। যথাযথ সংরক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অমূল্য ঐতিহ্য হয়ে উঠতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊