শিক্ষক ১, পড়ুয়া ১৪, প্রাইমারি শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রামিন বাংলার এটাই বর্তমান অবস্থা !
শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির করাল গ্রাসে গ্রামীণ শিক্ষা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিরঞ্জন রায়ের হাতেই ভরসা নিরঞ্জন পাট জুনিয়র হাই স্কুলের আগামী প্রজন্মের
পরিকাঠাময় কোন খামতি নেই। ঝা চকচকে বিল্ডিং, শ্রেণিকক্ষের ভেতরে চেয়ার টেবিল বেঞ্চ ফ্যান আলো সহ সমস্ত কিছুই রয়েছে। রয়েছে সু বিশাল খেলার প্রাঙ্গণ। খামতি নেই মিড ডে মিলের ডাইনিং হলেরও। রয়েছে পরিশ্রুত পানীয় জলেরও ব্যবস্থা। আজ আমরা কথা বলছি একটি জুনিয়র হাই স্কুলের কথা। যা হয়তো কালের নিয়মে সময়ের স্রোতে আমাদের এই প্রতিবেদনে স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে। জানেন কেন এ কথা বলছি ?
জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ি ব্লকের মাগুরমারি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের গোসাইহাট লেবুতলা এলাকায় ২০১১ সালে স্থাপিত হয়েছিল পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়াদের জন্য নিরঞ্জন পাঠ জুনিয়র হাই স্কুল। যা বর্তমানে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। আস্ত এই জুনিয়র হাই স্কুলের কাগজে-কলমে মাত্র ১৪ জন ছাত্র রয়েছে। তবুও আবার পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত। অষ্টম শ্রেণীতে কোন পড়ুয়াই নেই। আরো অবাক করা বিষয় এই এত বড় স্কুলের দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। যিনি একা হাতে কখনো স্কুলের সাফাই কর্মী, কখনো লাইব্রেরিয়ান, কখনো দপ্তরি তো কখনো আবার পড়ুয়াদের জন্য হয়ে উঠছেন শিক্ষাগুরু।
তার ওপর বাড়তি স্কুলের কাগজে-কলমের একাধিক কাজ এই গেস্ট টিচারকেই সামলাতে হয়।। পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত মাত্র ১৪ জন ছাত্রর হিসেবটা সরকারি খাতায় থাকলেও উপস্থিতির হার মাত্র হাতে গোনা তিন থেকে পাঁচজন। এভাবেই একটি জুনিয়র হাইস্কুল চলছে। কোন হেলদোল নেই স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন এমনকি শিক্ষা বোর্ডের। না এই অভিযোগগুলো আমরা করছি না, অভিযোগগুলো স্থানীয় অভিভাবক থেকে শুরু করে এই স্কুলের একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত বর্তমানের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন রায়েরও।
গ্রামবাসী অভিভাবকদের দাবি স্কুলের শিক্ষক না থাকায় পড়ুয়া সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। হয়তো একটা সময় গিয়ে স্কুলটাই বন্ধ হয়ে যাবে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অবশ্য জানিয়েছেন গোটা বিষয়টি সকলের জানা থাকলেও সরকার কোন ভ্রুক্ষেপ নিচ্ছে না।
বর্তমানে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে গোটা স্কুলটি। তিনিও আগামী বৎসর অবসর নেবেন। তার আগে স্কুলের হাল ফেরাতে শিক্ষক নিয়োগ করবে কি না , তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা! পড়ুয়ারাও চাইছে স্কুলে আরো শিক্ষক নিয়োগ হোক নয়তো স্কুলটাই বন্ধ হবে, পড়াশোনায় একেবারে লাটে উঠে গেছে।
স্কুলের এই বর্তমান পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় মানুষ তাদের বাচ্চাদের পার্শ্ববর্তী উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলিতে পড়ুয়া ভর্তি করাচ্ছেন। এদিকে সু বিশাল এই স্কুলটি সকলের অজান্তেই বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊