আষাঢ় ফুরাতে চললেও বৃষ্টি নেই উত্তরবঙ্গে: জলের অভাবে ধানের চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা
কোচবিহার, ৭ই জুলাই, ২০২৫: আষাঢ় মাস প্রায় শেষ হতে চললেও কোচবিহারসহ উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টির দেখা নেই। মৌসুমী বায়ু সক্রিয় না হওয়ায় তীব্র জল সংকটে পড়েছেন কৃষকরা, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে ধানের চাষে। জলের অভাবে খেত ফেটে চৌচির, আর কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
সাধারণত, আষাঢ় মাসেই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা আমন ধান চাষের জন্য অপরিহার্য। এই সময়টা ধানের চারা রোপণ এবং খেত প্রস্তুত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এবার আষাঢ় প্রায় শেষ হতে এলেও বৃষ্টির দেখা না মেলায় কৃষকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেক কৃষকই এখনও ধানের চারা রোপণ করতে পারেননি, আর যাঁরা কিছু রোপণ করেছেন, তাঁদের খেত জলের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে।
কৃষকরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টির অভাবে গভীর নলকূপ বা অন্যান্য সেচ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কিন্তু ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেকেই চড়া সুদে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছিলেন, এখন জলের অভাবে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তাঁরা দিশাহারা।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং স্থানীয় বাতাসের টানাপোড়েনের কারণে মৌসুমী বায়ু উত্তরবঙ্গে সেভাবে সক্রিয় হতে পারছে না। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেও ভারী বৃষ্টির তেমন পূর্বাভাস নেই। ভারত আবহাওয়া দপ্তরের (IMD) পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৫ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে মূলত মেঘলা আকাশ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে চলতি মরসুমে ধানের উৎপাদন ব্যাপক হারে ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে খাদ্য উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃষ্টির জন্য আকাশের দিকে চেয়ে আছেন উত্তরবঙ্গের লক্ষ লক্ষ কৃষক। তাদের একমাত্র ভরসা প্রকৃতির কৃপা, যা এই খরার পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊