ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা: কূটনীতি না বাজার রাজনীতি?
৩০ জুন ২০২৫ তারিখে ভারত সরকার আকস্মিকভাবে বাংলাদেশ থেকে পাট, বোনা কাপড় এবং সুতার কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন করে এক উদ্বেগের জায়গা তৈরি করেছে। ভারতীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুসারে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে "ঘরোয়া শিল্পকে রক্ষা করা ও মাননিয়ন্ত্রণ নীতিমালার প্রয়োগ নিশ্চিত করার স্বার্থে।"
বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নির্ভর করে পাটজাত পণ্য ও সুতা-ভিত্তিক পণ্যের ওপর। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলারের পাটজাত পণ্য ভারতে রপ্তানি করেছিল। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের পাটকল ও গার্মেন্টস খাতে এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হতে পারে, যা কর্মসংস্থানেও প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, "আমরা এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করছি এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলবে।"
অন্যদিকে ভারতীয় বস্ত্র ও পাটশিল্প সংস্থাগুলো সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, বিগত এক দশকে সস্তা বাংলাদেশি আমদানির ফলে দেশীয় উৎপাদকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। নিষেধাজ্ঞা সেই চাপ লাঘব করতে পারে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপের পেছনে আঞ্চলিক রাজনীতি ও সীমান্ত ইস্যু নিয়ে সাম্প্রতিক অসন্তোষও প্রভাব ফেলতে পারে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গত কয়েক মাসে কিছুটা শীতল হয়ে উঠেছে—বিশেষ করে নদীজল বণ্টন, সীমান্তে সহিংসতা এবং অভিবাসন সমস্যা নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে অস্বস্তি বেড়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘমেয়াদে শুধু ব্যবসা নয়, কূটনৈতিক সম্পর্ককেও প্রভাবিত করতে পারে। কারণ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভিত্তি শুধু অর্থনীতিতে নয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক মিথস্ক্রিয়ার ওপরও দাঁড়িয়ে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊