ডুয়ার্সের রাস্তা সম্প্রসারণ-উন্নয়ন বনাম পরিবেশ রক্ষার টানাপোড়েন
ডুয়ার্সের (Dooars) বুকে রাস্তা সম্প্রসারণের এক নতুন পরিকল্পনা ঘিরে পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চালসা-গোলাই থেকে ময়নাগুড়ি বিডিও মোড় পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ জাতীয় সড়ক (National Highway) সম্প্রসারণের এই প্রকল্পে গাছ কাটার (tree felling) আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যা গরুমারা জাতীয় উদ্যানের (Gorumara National Park) পরিবেশগত ভারসাম্য (environmental balance) নষ্ট করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (NHAI) ৭১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের এই অংশটিকে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই রাস্তাটি সরাসরি গরুমারা জাতীয় উদ্যানের মধ্য দিয়ে গেছে, যা প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ (wildlife) সংরক্ষণের জন্য একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এর আগেও লাটাগুড়ি সংলগ্ন বিচাভাঙ্গার রেল ফ্লাইওভারের কাজের সময় বহু পুরনো গাছ কাটা পড়েছিল, যা পরিবেশ কর্মীদের মনে নতুন করে আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে প্রকল্পটি কেবল আলোচনার স্তরে রয়েছে এবং গাছ কাটার বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কর্মদক্ষ মহুয়া গোপ এই বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, "উন্নয়ন (development) অবশ্যই হবে, কিন্তু গাছ না কেটেই। পরিবেশ বাঁচিয়ে এগোতেই আমাদের অঙ্গীকার।" তার এই মন্তব্যে প্রশাসন পরিবেশ রক্ষার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা প্রকাশ করেছে। তবে এমন আশ্বাসে অনেক পরিবেশকর্মী পুরোপুরি ভরসা পাচ্ছেন না। তাদের মতে, উন্নয়নের প্রয়োজন থাকলেও তা যেন প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট না করে। প্রয়োজনে আইনি পথেও (legal action) হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। বনদফতরের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে যে, এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও গৃহীত হয়নি।
গরুমারার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেমের (ecosystem) মধ্যে প্রকৃতি ও পরিকাঠামোর মেলবন্ধন কীভাবে সম্ভব, এই প্রশ্নই এখন সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসনের মনে ঘুরছে। উন্নয়ন বনাম পরিবেশ (development vs. environment) রক্ষার এই টানাপোড়েনে ডুয়ার্স এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে। উন্নয়নের রাস্তায় হেঁটে প্রকৃতির ক্ষতি না করেই কি গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ডুয়ার্স।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊