শিলিগুড়িতে মানব পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ ! ৫৬ যুবতী উদ্ধার
শিলিগুড়ি, ২২শে জুলাই, ২০২৫: এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশন থেকে ৫৬ জন যুবতীকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) জিআরপি (Government Railway Police) এবং আরপিএফ (Railway Protection Force) যৌথ অভিযান চালিয়ে পাটনা অভিমুখে যাওয়া ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস থেকে এই যুবতীদের উদ্ধার করে। সোমবার রাতে এই যুবতীদের উদ্ধার করে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, আইফোন কোম্পানিতে চাকরির লোভ দেখিয়ে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং ডুয়ার্সের মোট ৫৬ জন যুবতীকে বিহারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, এই যুবতী এবং তাদের পরিবারকে বলা হয়েছিল যে তাদের কাজের জন্য বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়া হবে। অথচ তাদের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে এনে এনজেপি-পাটনা ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসে তোলা হয়। আরেকটি চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, কারো কাছেই কোনো টিকিট ছিল না; প্রত্যেকের হাতেই কোচ নম্বর এবং বার্থ নম্বরের সিল মেরে দেওয়া হয়েছিল।
সোমবার রাত ৯টা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে জিআরপি এবং আরপিএফ ট্রেন তল্লাশি চালানোর সময় এই যুবতীদের একসাথে দেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। একসাথে এত যুবতী কোথায় যাচ্ছে, এই বিষয়টি জিআরপি এবং আরপিএফ-এর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে। এরপর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। জানা যায়, যুবতী এবং তাদের পরিবারকে বলা হয়েছে যে একটি বেসরকারি কোম্পানি, যার নাম আইফোন, বেঙ্গালুরুতে তাদের চাকরি দেবে। এরপরেই জিআরপি এবং আরপিএফ-এর সন্দেহ আরও বাড়ে, কারণ তাদের বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বিহারের ট্রেনে তোলা হয়েছিল।
এরপর ওই যুবতীরা জানায় যে কলকাতার বাসিন্দা জিতেন্দ্র পাশওয়ান এবং শিলিগুড়ির চন্দ্রিকা নামে এক মহিলা তাদের নিয়ে যাচ্ছেন। এরপর আরপিএফ এবং জিআরপি জিতেন্দ্র এবং চন্দ্রিকার খোঁজ শুরু করে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনেই দুজনকে আটক করা হয়। দুজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাদের কথায় অসংগতি মেলে। এরপর ওই ট্রেন থেকে ৫৬ জন যুবতীকে নামিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন জিআরপি থানায় নিয়ে আসা হয়।
প্রত্যেকের বাড়িতে খবর দেওয়া হয় এবং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। নিউ জলপাইগুড়ি জিআরপি এবং আরপিএফ ওই ৫৬ জন যুবতীকে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেয়। এই ঘটনায় কলকাতার জিতেন্দ্র পাশওয়ান এবং শিলিগুড়ির চন্দ্রিকা নামে এক মহিলাকে আটক করেছে জিআরপি। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বেঙ্গালুরুতে কোন কোম্পানিতে ওই যুবতীদের কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তার কোনো নথি আটককৃতরা দেখাতে পারেনি। পাশাপাশি, তাদের বিহারের ট্রেনে কেন তোলা হলো, তারও কোনো সদুত্তর মিলছে না। গোটা ঘটনার তদন্তে জিআরপি এবং আরপিএফ-এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊