রেল সংক্রান্ত একাধিক দাবী নিয়ে ডেপুটেশন দিলো সিপিআই(এম)

CPI(M) sends deputation on multiple railway-related demands


পূর্বের মতো ২ টি যাত্রীবাহী ট্রেন অবিলম্বে রাণীনগর স্টেশনে স্টপেজ ও নতুন ১ টি কলকাতা গামী ট্রেন রাণী নগর স্টেশনে স্টপেজ, জাতীয় সড়ক থেকে রাণীনগর স্টেশন আসার পর্যন্ত বেহাল রাস্তা সংস্কার সহ ৬ দফা দাবিতে রানীনগর স্টেশন ম্যানেজারের মারফত ডিআরএম কাটিহার ডিভিশনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করল সিপিআই(এম)।

রানীনগর হাটের সামনে থেকে মিছিল করে রানীনগর স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে প্ল্যাটফর্মে প্রতিবাদ জানিয়ে স্টেশন ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য জলপাইগুড়ি শহরের ঢোকার মুখে গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা হিসাবে বাম জমানায় গড়ে উঠেছিল রাণীনগর শিল্পাঞ্চল এখানে রয়েছে কোকাকোলা, আইওসি সহ বিভিন্ন ন্যাশনাল মাল্টি ন্যাশনাল সংস্থার ফ্যাক্টরি ও বিভিন্ন প্রজেক্ট, পাশেই রয়েছে রানীনগর বিএসএফ ক্যাম্প । এক সময় তিস্তা তোর্সা, বঙাইগাঁও এক্সপ্রেস সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের স্টপেজ ছিল। কলকাতা নিউ আলিপুর রুটে যাতায়াত করা তিস্তা তোর্সা ট্রেন যাতায়াতের পথে রানীনগর স্টেশনে সকালে ভাগ হয়ে দুপুরে এখান থেকেই জুড়ে রওনা হত। তিস্তা তোর্সা ট্রেনকে ঘিরে ছিল এলাকার মানুষের বিরাট ব্যবসা ছিল।

দীর্ঘক্ষণ তিস্তা তোর্ষা রানীনগর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে যাত্রীদের হাতে জলের বোতল সহ স্থানীয় ভাঁপা পিঠা সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রিক তুলে দিতেন এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। একই চিত্র দেখা যেত বঙ্গাইগাঁও এক্সপ্রেস স্টপেজ এর সময়ও।

কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে কোন অজানা কারণে তিস্তা তোর্সা, বঙাইগাঁও এক্সপ্রেসের স্টপেজ রাণীনগর স্টেশন থেকে তুলে নেওয়া হয় । যারফলে অসুবিধায় পড়েন এই এলাকার মানুষ। এই দুই ট্রেন চলার সময় এই এলাকার বিএসএফ ক্যাম্পে থাকা বহু বিএসএফের জয়ান এবং আধিকারিকরা এই স্টেশন থেকে যাতায়াত করতেন।

আজ স্টেশন ম্যানেজার ছুটিতে থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ষ্টেশন ম্যানেজার সিপিআই(এম) সদর-পশ্চিম এরিয়া কমিটির স্মারকলিপি গ্রহণ করে আজকের মধ্যেই যথাযোগ্য স্থানে অর্থাৎ তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ডিআরএম কাটিহার ডিভিশনের নিকট স্মারকলিপি পৌঁছবার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।

সিপিআই(এম)-এর মিছিলে পা মেলান রাণীনগর এলাকার বহু ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। স্মারকলিপি প্রদানের সময় নেতৃবৃন্দ দাবি করেন অবিলম্বে রানীনগর স্টেশন থেকে জাতীয় সড়কগামী রাস্তা যেখানে বোল্ডার বেরিয়ে গেছে রাস্তায় গিয়ে নদী-নালা খাল বিলের মতন জল বয়ে যাচ্ছে। যে রাস্তা টোটো ,সাইকেল পারাপারের অযোগ্য অবিলম্বে সেই রাস্তা সংস্কার করতে হবে। এর পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়ার প্রয়োজনে এই স্টেশন থেকে মালবাহী ট্রেনের ওয়াগান উঠানো নামানোর ব্যবস্থা করতে হবে, পুনর্বাসন ছাড়া এলাকার ব্যবসায়ী হকার ও বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা যাবে না, রানীনগর স্টেশনের ওপারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্কুল রয়েছে। এপারে রয়েছে রানীনগর হাট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অঞ্চল অবিলম্বে রেল লাইনের উপর দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা জন্য ওভার ব্রিজের এক্সটেনশন করতে হবে, তিস্তা তোর্ষা বঙ্গাইগাঁও এক্সপ্রেস ও কলকাতা গামী ট্রেনের স্টপেজ অবিলম্বে রানীনগর স্টেশনে দিতে হবে, রানীনগরের স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত উত্তর কুমার পাড়ায় রেলের আন্ডার পাশে বর্ষাকালে যাত্রীদের ভেলা চড়ে যাতায়াত করতে হয়।

সদর পশ্চিম এরিয়া কমিটির সম্পাদক শুভাশিস সরকার জানান এর পূর্বেও বহুবার এই সমস্ত বিষয় নিয়ে রেলের আধিকারিকদের জানানো হয়েছে স্মারকলিপির মাধ্যমে । একসময়ের জমজমাট রানীনগর স্টেশন জনশূন্য মৃতপ্রায় রেলস্টেশনে পরিণত হয়েছে অথচ এটা জংশন রেল স্টেশন যে জংশন রেলস্টেশনে কোন ট্রেন দাঁড়ায় না। তিনি আরও জানান, আজকের দাবি গুলি পূরণ না করলে এলাকার মানুষকে সাথে নিয়ে রেল রোকো সহ বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন তারা।

মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন এরিয়া কমিটির সম্পাদক শুভাশিস সরকার, পার্টির জেলা নেতা তপন গাঙ্গুলী, যুব নেতা প্রতীক দত্ত, কৃষক নেতা চরণ সিং, বিশ্বজিৎ মোহন্ত, শুভায়ু বল, ক্ষেত মজুর আন্দোলনের নেতৃত্ব নবাব আলি, গৌরী অধিকারী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।