নদিয়ার কালীগঞ্জে উপনির্বাচনের পর বোমাবাজি, মৃত্যু এক শিশুর—প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর




নদিয়ার কালীগঞ্জে উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের পর দিনদুপুরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। সোমবার দুপুর নাগাদ মোলান্দি এলাকায় এক সিপিএম সমর্থকের বাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া বোমায় গুরুতর জখম হয় এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।

ঘটনাটি নদীয়ার কালীগঞ্জ থানা এলাকার মোলান্দি গ্রামের। জানা যায় ওই নাবালিকা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী নাম তামান্না খাতুন। ছিন্নভিন্ন ও রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে। এ বিষয়ে তৃণমূল নদীয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তারান্নুম সুলতানা মীর বলেন, প্রশাসনকে বলবো কঠোর পদক্ষেপ নিতে। দোষীরা যাতে ছাড়া না পায়। তবে আমার মনে হয় না তৃণমূলের বিজয় উল্লাস থেকে এটা ঘটেছে। এটা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র হয়ে থাকতে পারে।

অন্যদিকে এ বিষয়ে এলাকার সিপিএম কর্মী বাদশা শেখ বলেন, এলাকায় ওরা জয়ের উল্লাসে বোমাবাজি করছিল। অনেকটা সিপিএম কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমাবাজির চেষ্টা করছিল। ঠিক তখনই ওই বাচ্চা মেয়েটির গায়ে লাগে। এরপর পুরো দেহ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। তবে কালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের ভোটের ফলাফলের দিন এক নাবালিকার সকেট বোমার আঘাতে মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য কালীগঞ্জ বিধানসভা এলাকায়।

ঘটনার পরে গোটা এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিজয় মিছিল থেকে আচমকা বোমাবাজি শুরু হয়, যার শিকার হয় ওই নাবালিকা।

ঘটনার খবর পৌঁছতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গভীর শোক প্রকাশ করেন। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, "আমি স্তম্ভিত, অত্যন্ত ব্যথিত। তার পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। পুলিশ অবশ্যই দ্রুত কড়া আইনি পদক্ষেপ নেবে। দোষীদের কড়া শাস্তি দিতে হবে।"

নির্বাচন কমিশন এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করতে তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।


এই ঘটনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। একইসঙ্গে রাজনৈতিক সহিষ্ণুতার অভাব এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।