স্যোসাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং, জেনেনিন জিবলি আর্ট সম্পর্কে
অনুপম মোদক, সংবাদ একলব্য:
সম্প্রতি, জিবলি আর্ট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিশেষ উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে। এই আর্টের বিশেষত্ব হলো এটি জাপানি অ্যানিমেশন স্টুডিও 'স্টুডিও জিবলি'র শৈলীর মতো। স্টুডিও জিবলির বিখ্যাত সিনেমাগুলো যেমন 'মাই নেইবার টোটোরো', 'স্পিরিটেড অ্যাওয়ে', এবং 'কিকিস ডেলিভারি সার্ভিস' এই শৈলীতে তৈরি হয়েছে।
এই জিবলি আর্ট তৈরি করার জন্য, লোকেরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করছে। ওপেনএআই-এর নতুন ভার্সন GPT-4o-এর মাধ্যমে সহজেই নিজেদের ছবিকে জিবলি স্টাইলে পরিবর্তন করা যাচ্ছে।
এই নতুন প্রবণতা সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেলিব্রিটি, রাজনীতিবিদ, এমনকি ওপেনএআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যানও জিবলি স্টাইলে ছবি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন।
তবে, এই নতুন প্রবণতা নিয়ে কিছু বিতর্কও দেখা দিয়েছে। অনেকেই এই এআই-জেনারেটেড আর্টকে নকল বলছেন। স্টুডিও জিবলির প্রতিষ্ঠাতা হায়াও মিয়াজাকি এআই-নির্মিত অ্যানিমেশন সম্পর্কে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এই বিতর্ক সত্ত্বেও, জিবলি আর্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লোকেরা তাদের নিজেদের ছবি এবং প্রিয় সিনেমার দৃশ্যগুলোকে জিবলি স্টাইলে পরিবর্তন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন।
একনজরে জিবলি
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন নেতা-নেত্রী, সংবাদ মাধ্যমের কর্মী, চিকিৎসক সকলেই তাদের কার্টুন ছবি ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করছেন।
জিবলি আসলে একটি জাপানি অ্যানিমেশন স্টুডিওর নাম। ১৯৮৫ সালে জাপানের টোকিওতে এই স্টুডিওটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। উজ্জ্বল জল রং অথবা অ্যাক্রেলিক রং দিয়ে হাতে আঁকা হত এই স্টুডিওর সমস্ত অ্যানিমেশন। খামখেয়ালি কল্পনায় আঁকা সেই সমস্ত ছবি থেকে ফুটে বেরোত অজানা সুখানুভূতি। আর সেই কারণে, খুব তাড়াতাড়ি এই অ্যানিমেশনের জনপ্রিয়তা জাপানের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে যায়।
জিবলি নামের উৎপত্তি:
* জিবলি নামটি এসেছে আরবি শব্দ 'জিবলি' থেকে। আরবি ভাষায় 'জিবলি' বলতে সাহারা মরুভূমির উত্তপ্ত এবং শুষ্ক হাওয়াকে বোঝানো হয়।
* জিবলি স্টুডিওর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, জাপানি অ্যানিমেশন শিল্পী এবং চলচ্চিত্রকার হায়াও মিয়াজাকি এই নাম বেছে নিয়েছিলেন ইতালির একটি বিমানের নাম থেকে। ক্যাপ্রোনি কা.৩০৯ নামের ওই বিমান ছিল সাহারা মরুভূমিতে ইতালির নজরদারি চালানোর বিমান।
* হায়াও মিয়াজাকি চেয়েছিলেন, জিবলি তার নামের অর্থের মতোই অ্যানিমেশনের দুনিয়ায় নতুন হাওয়া নিয়ে আসবে।
জিবলির জনপ্রিয়তা:
* গত ৩৮ বছরে জিবলি স্টুডিও হাতেগোনা ২২টি ছবি তৈরি করেছে। এছাড়াও টেলিভিশনের জন্য বানিয়েছে ৩টি ছবি।
* এই স্টুডিওর তৈরি ছবিগুলি অ্যানিমেশন দুনিয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয়।
* জাপানের যে প্রথম দশটি ছবি আজও ব্যবসা দেয় এবং সর্বকালের সেরা ব্যবসা করেছে, তার মধ্যে চারটিই জিবলি স্টুডিওতে তৈরি।
* জিবলির ছবি অস্কার, গোল্ডেন বিয়ার, বাফতা, গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারও জিতেছে একাধিক বার।
* জিবলির তৈরি ছবি 'স্পিরিটেড অ্যাওয়ে' হল প্রথম 'নন-ইংলিশ' অ্যানিমেশন ছবি, যা মূল বিভাগে অস্কার জেতে।
* ২০২১ সালে জিবলির জনপ্রিয়তা দেখে টোকিয়োয় জিবলি মিউজ়িয়ামও তৈরি করা হয়।
* জিবলির দৌলতে মিয়াজাকি ২০২৪ সালে এশিয়ার 'নোবেল প্রাইজ়' র্যা মন ম্যাগসেসাই পুরস্কারও পান।
জিবলি ট্রেন্ড:
* সম্প্রতি ওপেন এআই-এর চ্যাট জিপিটিতে ব্যবহারকারীরা দেখতে পান, তাঁরা তাঁদের ছবি জিবলি শৈলীতে তৈরি করতে পারছেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊