কাদম্বিনী ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে তিন প্রধান ক্লাবের সমর্থকদের অভিনব আন্দোলন 




গৌতম সাহা,কোলকাতাঃ

আজ কোলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হওয়ার কথা ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ফুটবল ক্লাবের ডুরান্ড কাপের ম্যাচ। এই মরশুমে এটাই ছিল প্রথম ডার্বি ম্যাচ। কিন্তু আইনশৃঙ্খলাজনিত কারণে বিধাননগর পুলিশ এই ম্যাচ বাতিল করে। ডার্বি ম্যাচ বাতিল হওয়া নিয়ে সমালোচনার ঝড় তো দেখা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

কাদম্বিনী ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে তিন প্রধান ক্লাবের সমর্থকদের অভিনব আন্দোলন






প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরে কোলকাতায় আর জি কর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার এর ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ধর্ষক তথা হত্যাকারীর গ্রেপ্তারের দাবীতে বিভিন্ন ভাবে আন্দোলন হয়ে চলেছে। তবে ইষ্ট - মোহন সমর্থকরা এই ম্যাচে এক হয়ে " we want Justice " এই শ্লোগানে মুখরিত হবেন বলে মুখিয়ে ছিলেন।তাদের কাছে এই ম্যাচটাই প্রতিবাদের নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠতে চলেছিল। তাদের কাছে এই ম্যাচটায় জয়পরাজয় গৌণ বরং প্রতিবাদটাই মুখ্য হয়ে উঠতে চলেছিল। এমন একটি অবস্থায় পুলিশের বাঁধায় ম্যাচটি বাতিল করতে বাধ্য হয় ডুরান্ড কাপ কমিটি। খেলা বাতিল হওয়ায় সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

কাদম্বিনী ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে তিন প্রধান ক্লাবের সমর্থকদের অভিনব আন্দোলন

সমাজমাধ্যমে উভয় দলের সমর্থকরা ম্যাচ বাতিলের কারণে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করেন। বিকাল ৪ টা থেকেই স্টেডিয়াম সংলগ্ন ইএম বাইপাস রোডে জমায়েত শুরু করেন হাজার হাজার ফুটবল সমর্থক। নজিরবিহীন ভাবে ইষ্টবেঙ্গল মোহনবাগানের সমর্থকরা চিরকালীন শত্রুতা ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজের দলের জার্সি পড়ে প্রতিবাদে নেমে পড়েন। 

কাদম্বিনী ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে তিন প্রধান ক্লাবের সমর্থকদের অভিনব আন্দোলন


প্রতিবাদে পা মেলাতে চলে আসেন বেশ কিছু মহামেডান সমর্থকরাও। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এই মিছিল করতে বাঁধা দেন এমনকি লাঠি চার্জও করেন। বেশ কিছু সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয় এমনটাই খবর। এই কারণে সমর্থকরা কিছুটা ছন্নছাড়া হলেও ধীরে ধীরে কয়েকটা দলে ভাগ হয়ে জমায়েত হতে থাকেন ই এম বাইপাশ রোডে। সেখানেই নতুন উদ্যোমে প্রতিবাদ আন্দোলন করতে থাকেন উভয় দলের সমর্থকরা। যদিও পরে পুলিশ তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচী চালাতে আর কোন বাঁধা দেননি।

কাদম্বিনী ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে তিন প্রধান ক্লাবের সমর্থকদের অভিনব আন্দোলন

তবে এই প্রতিবাদের কারণে ই এম বাইপাশ রোডে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৫ ঘন্টা পরে রাস্তা অবরোধ উঠে যায়। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাবের সমর্থকরা যেভাবে এক হয়ে প্রতিবাদে মুখরিত হলো তা যে এক নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করলো তা বলাই বাহুল্য। এখন দেখার আর জি করের নির্যাতিতা সত্যি জাস্টিস পান কিনা?