নববর্ষ ১৪৩১: সবকিছু ডিজিটাল হয়ে গেলেও হালখাতার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন আমির হোসেন
জলপাইগুড়ির এই ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে এ বছরও জলপাইগুড়ি ছুটে এসেছেন এনারা । বুঝতে পারছেন না কীসের ঐতিহ্য? কিংবা এনারা কারা?
আসন্ন পয়লা বৈশাখ। কম্পিউটার জামানা শুরু হতেই ভাটা পড়েছে নববর্ষের লাল মলাট জড়ানো এই খাতার বিক্রি! তবুও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতিবছরের মতো এবারও ভিন রাজ্য থেকে জলপাইগুড়ি এসেছেন আমির হোসেনরা। প্রায় চার দশক ধরে এই হাল খাতা বা জাবেদা খাতা নিয়ে বিহার থেকে জলপাইগুড়ি পাড়ি দিয়েছেন আমির হোসেন। তবে এই ডিজিট্যাল যুগে ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বছরে মাত্র একবার ব্যবসায়ীরা কেনেন এই খাতা তারপর সারা বছর চলে কম্পিউটারে হিসাব নিকাশ। আর এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখছে মোহাম্মদ আমিরের মতো ব্যক্তিরা।
বছরে একবার হলেও এই সুযোগে যাতে কিছু কেনা বেচা হয়, তাই নতুন হাল খাতা নিয়ে সুদূর বিহার থেকে এবারেও জলপাইগুড়িতে পা রেখেছেন আমির হোসেন।
চলছে রমজানের মাস। রোজা রেখেও কাজে বিরতি নেই আমির হোসেন সহ মহম্মদ হাবিব, মহম্মদ সাবির, মহম্মদ আমজাদের। হালখাতা ও রামনবমীর খাতা তৈরিতে এখন ব্যস্ত তাঁরা। তবে কর্মীদের সংখ্যা বেশ কম। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে ব্যাপক চাহিদা ছিল এই হালখাতার। এখন বিশেষ চাহিদা না থাকায় প্রচুর সংখ্যক হালখাতা বানানো আর হয় না ফলোতো কাজ হারিয়েছেন বহু কর্মী। এখন সামান্য কয়েকটি হালখাতা বানাতে হাতেগোনা কজনা সঙ্গী নিয়েই তিনি এসেছেন জলপাইগুড়িতে।
হালখাতা ও রামনবমীর খাতার চাহিদা খানিক কমলেও কিছু ব্যবসায়ীই এখনও হালখাতার ওপরই ভরসা করেন। তাই খাতা তৈরির কাজ থেকে সরে যাননি আমির হোসেন। জলপাইগুড়ির ব্যবসায়ীদের ভরসা এখনও তিনিই। এবারও কম বেশি ভালোই বিক্রি হবে বলেই আশা করছেন ।
মাত্র ১০০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা এই হালখাতার মূল্য। ভালো বাঁধাই আর ন্যয্য মূল্য হওয়ায় ভালোই চাহিদা রয়েছে চাচাদের বানানো হালখাতার । ইতিমধ্যেই এনারা বিহার থেকে জলপাইগুড়ি চলে এসেছেন হালখাতা বানানোর উদ্দেশ্যে। প্রত্যেক বছরের মত এবছরও এক মাসের মত তারা থাকবেন এখানে।
তাদের কথায়, প্রতিবার আমরা আসি। কখনও মনে হয় না বাড়ির বাইরে আছি। সম্প্রীতির আদর্শ শহর জলপাইগুড়ি। সময়ের সঙ্গে সবকিছু ডিজিটাল হয়ে গেলেও কোনও রকমে পুরোনো প্রথা ধরে রেখেছেন আমির হোসেনের মতো ব্যক্তিরাই।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊