ঐতিহ্যবাহী টমটম গাড়ির আওয়াজে মেতে উঠেছে কোচবিহারের রাসমেলা 

tomtom car



কোচবিহারের রাসমেলা, রাজনগরের সীমানা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলা ছাড়াও আসাম, বিহার থেকেও অসংখ্য ভক্তের আগমন ঘটে কোচবিহারের রাসমেলায় । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রাসচক্র ছাড়াও আরও একাধিক বিষয় রয়েছে কোচবিহারের রাসমেলাকে ঘিরে। যেমন টমটম গাড়ি। না, চার চাকার কোন যন্ত্রচালিত গাড়ি নয়, কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ঘিরে এই টমটম গাড়ি এক এক স্মৃতি মেদুর অনুভূতির জন্ম দেয়।

এটি আসলে বাঁশ এবং মাটির চাকার তৈরি এক বিশেষ খেলনা গাড়ি, যার পোশাকি নাম টমটম গাড়ি। এই নামের পিছনে গাড়িটি থেকে উৎপন্ন শব্দই হয়তো বড় ভূমিকা নিয়েছে।

জানাযায় কয়েক প্রজন্ম ধরে কোচবিহারে রাসমেলাকে কেন্দ্র করে এই টমটম গাড়ি বানিয়ে আসছেন বিহারের কাটিহার জেলার বেশ কিছু পরিবার। চলতি বছর মেলার শুরুতেই তাদের উপস্থিতি আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলেছে ইতিমধ্যেই।

কোচবিহার রাসমেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খেলনা টমটম গাড়ির কারিগর রামানুজ বলেন, রুজি-রুটির টানে তারা কোচবিহারে এসেছেন। প্রতিবছরই আসেন। তিনি যখন প্রথম আসেন তখন ১৯৮৪ সাল। ঠাকুরদা বাবা সকলেই আসতেন এই রাসমেলাতে। এবার তিনিও এসেছেন তার ছেলেকে সাথে নিয়ে।

তাদের এই বিশেষ টমটম গাড়ি রাসমেলার এক অন্যতম ঐতিহ্য । মাটির পাত্রের ওপরে আঠা লাগানো বেলুন, তার উপরে দুটি কাঠি লাগানো রয়েছে। বাঁশের বাতা দিয়ে এক অভিনব কায়দায় ওই কাঠিতে চাপ পড়লে বেলুনের ওপরে শব্দ হয়, টম টম টম টম। ছোটদের তো বটেই বড়দের কাছেও এই টমটম গাড়ি বেশ আকর্ষণীয়।

দ্রব্যমূল্যের বাজারে গাড়ির দাম কিছুটা বাড়লেও কারিগরদের আর্থিক সঙ্গতি বৃদ্ধি পায়নি। বছরের পর বছর তারা বিভিন্ন মেলায় ঘুরে অস্থায়ী তাঁবু বানিয়ে এই গাড়ি বিক্রি করেন। কোচবিহার এবিএন শীল কলেজের বিপরীতে তাদের এই অস্থায়ী বাসস্থান। কারিগরিরা জানান চলতি বছর গাড়ির দাম রাখা হয়েছে কুড়ি টাকা। ঐতিহ্য এবং ভালোবাসা মদন মোহনের রাস উৎসব, তাই এই বছরও তাদের টেনে নিয়ে এসেছে কোচবিহারে।