দশমহাবিদ্যার অন্যতমা মা ছিন্নমস্তার পূজা বাসন্তীরহাটে 

মা ছিন্নমস্তা



ছিন্নমস্তা-দশমহাবিদ্যার অন্যতমা এবং মহাশক্তির একটি ভীষণা রূপ। ছিন্নমস্তা দেবী ছিন্নমস্তিকা বা প্রচণ্ড চণ্ডিকা নামেও পরিচিতা। তার ভয়ংকর মূর্তিটি দেখে সহজেই তাকে চেনা যায়। তার এক হাতে থাকে তার নিজের ছিন্ন মুণ্ড, অপর হাতে থাকে একটি কর্তৃকা । দেবীর কবন্ধ থেকে তিনটি রক্তধারা নির্গত হয়ে একটি তার নিজের মুখে এবং অপর দুটি তার দুই সহচরীর মুখে প্রবেশ করে।



ছিন্নমস্তা সাধারণত রতিসংগমরত যুগলের দেহের উপর দণ্ডায়মান অবস্থায় কল্পিতা হন। ছিন্নমস্তা আত্মবলিদান এবং কুণ্ডলিনী জাগরণের দেবী। তাকে একাধারে যৌনসংযম ও যৌনশক্তির প্রতীক মনে করা হয়। অন্যদিকে তিনি একাধারে দিব্যজননীর জীবনদাত্রী এবং জীবনহন্তা সত্ত্বারও প্রতীক।

ছিন্নমস্তার পূজা বাসন্তীরহাটে


দশমহাবিদ্যার অন্যতমা হলেও এককভাবেও তার পূজা প্রচলিত আছে। উত্তর ভারত ও নেপালে ছিন্নমস্তার একাধিক মন্দির রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহরের ছিন্নমস্তা মন্দিরটিও প্রসিদ্ধ। তবে গৃহস্থবাড়িতে তার পূজা করা হয় না। তার কারণ লোকবিশ্বাস অনুযায়ী তিনি এক ভীষণা দেবী এবং তার পূজা করা বা দর্শন কামনা করা বিপজ্জনক। কেবলমাত্র তান্ত্রিক যোগী এবং সর্বত্যাগীগণ বীরাচার মতে তার পূজা করে থাকেন। হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মে ছিন্নমস্তার পূজা প্রচলিত। তিব্বতি বৌদ্ধ দেবী বজ্রযোগিনীর ছিন্নমুণ্ডা রূপটির সঙ্গে দেবী ছিন্নমস্তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ।


দিনহাটা মহকুমার বাসন্তীরহাটে বিগত ৩৭ বছর থেকে মা ছিন্নমস্তার পূজা অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে করা হয়। এবছরও বাসন্তীরহাট ব্রীজ সংলগ্ন সৎসঙ্গ কমিটির ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মা ছিন্নমস্তার পূজা।


জানাযায় সুধীর কর্মকার নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি সর্বপ্রথম মা ছিন্নমস্তার একটি ছবি এনে ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় প্রথম পূজার সূচনা করেন। তারপর থেকে এক তান্ত্রিকের হাত ধরে মা ছিন্নমস্তার পূজা আজও নিয়ম নিষ্ঠার সাথে প্রতি বছর শ্রাবণ সংক্রান্তিতে হয়ে থাকে এই মন্দিরে।


স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা যায়, বানিয়াদহ নদীর ধারে গড়ে ওঠা এই ছিন্নমস্তা মায়ের মন্দির অতি জাগ্রত। এখানে যারা মনস্কামনা করেন তাদের মনস্কামনা পূর্ন হয়।