তিনটি কয়লা খনির ভেতর হঠাৎ ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো এলাকায়

coal erea



পশ্চিম বর্ধমানের রানীগঞ্জের বাঁশড়া ওসিপিতে তিনটে কয়লার খনির ভেতরে হঠাৎ করেই ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো রানীগঞ্জের বাঁশড়া এলাকা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়লা উত্তোলনের কাজ চলছিল তখন ইসিএল কর্তৃপক্ষ শনিবার সকাল থেকেই সেই কয়লাখনি মধ্যে ব্যাপক আকারে ধোঁয়া বেরোতে দেখে। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পায় যে ওই কয়লা খনির কয়লা স্তরে আগুন গেলেছে এমনকি কয়লা খনির তিনটি গহবরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখে।

কয়লা স্তরে আগুন ক্রমশই ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মাঝে মাঝেই বিকট শব্দের সাথে ফাটছে কয়লা স্তর ও যেখানে সেখানে মাটির ভেতর থেকে মাটি ফেটে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। দমকলে খবর দেওয়া হলে কয়লা খনির গভীর গহবরে এই আগুন লাগার বিষয়টি লক্ষ্য করে, আগুনের কাছে পৌঁছাতে না পেরে তারা দীর্ঘ প্রচেষ্টা চালিয়ে ফিরে আসে দমকল।

আগুন লাগার ঘটনার খবর ইসিএলের ওই কোলিয়ারির খনি আধিকারিকেরা জানতে পারে। তারা এরিয়া অফিসে এ বিষয়ে খবর দিলে কুনুস্থোড়িয়া এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। যে স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে, তার ঠিক পাশেই ইসিএল ওই অংশ থেকে, ওই খোলা মুখ খনি থেকে জল সরিয়ে, লাগোয়া অংশের বিস্তীর্ণ এলাকায় খনির জল ফেলায়।

তবে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে ওই এলাকা যা গ্রামবাসীরা বারংবার ইসিএলকে অভিযোগ করেন তাদের কর্মসংস্থান ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করে আসলেও, সেখানে জলস্তর সরিয়ে দেওয়ার কোন উদ্যোগ পূর্বে নেওয়া হয়নি। তাই এখন কয়লা খনিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে, সে সময় এলাকার মানুষ ওই কয়লা খনির উপরিভাগে জমে থাকা জল কেটে, এই জল কয়লা খনিতে ভরার উদ্যোগ নেই ইসিএল কর্তৃপক্ষ। সেই জল জ্বলন্ত কয়লার খনিতে ভরতে গেলে এলাকার বেশ কিছু গ্রামবাসী বাধা দেয়। গ্রামবাসীরা ই সি এল কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরনের দাবি করে তাদের দাবি মানলে তবেই তারা জমে থাকা জল কাটতে দেবে। এমনকি ইসিএল কর্তৃপক্ষ গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়ে। পরে জেনারেল ম্যানেজারের নির্দেশক্রমে কয়লা খনির পুড়ে যাওয়া অংশটি কে মাটির দিয়ে ভরাট করে কয়লা খনির আগুন নেভাবার জন্য চেষ্টা চালায় ।

উল্লেখ্য, কয়লা খনির আগুন লাগার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও বহু ক্ষেত্রে, বহুবার কয়লা খনির কয়লা স্তর অক্সিজেনের সংস্পর্শে চলে আসায় সেই কয়লা স্তরে আগুন লেগে যায়। যার ফলে বেশ কয়েকটি এলাকাতে এই খোলা মুখ খনির আশেপাশে ধসের ঘটনা দেখতে পাওয়া গেছে।

বাঁশড়ার গ্রামবাসী রাও এবার এই কয়লা খনিস্তরে আগুন লাগার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের দাবি সঠিকভাবে কয়লা খনির আগুন যদি না নেভানো হয়, তাহলে কয়লা স্তরে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে, এলাকায় সেই আগুনের প্রভাব বিস্তার করবে। যার ফলে ধসের মতো ঘটনা ঘটতে পারে, বলেই মনে করছে অনেকে।

উল্লেখ্য, এই কয়লা খনি যেখানে রয়েছে তার কিছুটা দূরেই রয়েছে রেল লাইন আর এই কয়লা খনির ঠিক কয়েকশো মিটার দূরে রয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল এর পাইপলাইন যা এই কয়লা খনির আগুনের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, একইভাবে লাগুয়া অংশে রয়েছে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড মাইন্স যাও প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা।

যদি ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন বিষয়টিকে নিয়ে তারা সচেতন রয়েছেন। খুব শীঘ্রই এই সমস্যা দূর করে, কয়লা খনির আগুন নিভিয়ে ফেলার জন্য তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।